ক্যাপ্টেনের ভুল ছিল না: ইউএস বাংলা


ক্যাপ্টেনের ভুল ছিল না: ইউএস বাংলা
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর চলছে উদ্ধার কাজ। ছবি: রয়টার্স
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর চলছে উদ্ধার কাজ। ছবি: রয়টার্স

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ফ্লাইট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের দিক থেকে কোনো ভুলভ্রান্তি ছিল না বলেই মনে করছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার সকালে ইউএস বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে.. ক্যাপ্টেনের কোনো প্রবলেম আমরা আসলে খুঁজে পাইনি।

“ইউএস-বাংলার ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের বিমানে তিনি ১৭০০ ঘণ্টা ফ্লাই করেছেন। বাংলাদেশের এভিয়েশনে ৫০০০ ঘণ্টার উপরে কাজ করেছেন। কাঠমান্ডু এয়ারফিল্ডে শতাধিক ল্যান্ডিং ওনার আছে। এয়ারফিল্ড, এয়ারক্রাফট ওনার জন্য নতুন কিছু না। আমাদের মনে হয় না, এখানে ক্যাপ্টেনের কোনো ভুলভ্রান্তি আছে।”

ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস ২১১ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ এখনও স্পষ্ট না হলেও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে পাইলটের শেষ মুহূর্তের কথোপকথনের একটি রেকর্ড প্রকাশ পেয়েছে, যাতে মনে হয় রানওয়েতে নামা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়ে থাকতে পারে।

বিষয়টি নিয়ে কামরুল বলেন, “এটিসি কন্ট্রোল ও পাইলটের লাস্ট মিনিটগুলোর কনভারসেশন ভাইটাল এভিডেন্স হিসেবে কাজ করবে। ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার হয়েছে। ইউটিউবে অডিও এসেছে, আমরা সেটা শুনেছি। সেখানে ডেফিনিটলি একটা কনফিউশন আছে। সেখানে নেপালি মিডিয়াসহ বিশ্ব গণমাধ্যমে এটিসি কন্ট্রোলকে কিছুটা দোষারোপ করা হচ্ছে।

“আমরাও বলছি, এ ধরনের অবস্থার মধ্যে এটিসি কন্ট্রোল থেকেও মিসগাইডেড হতে পারে। ব্ল্যাকবক্স রিডিং সময়ের ব্যাপার। আমরা আশা করছি, আমরা পজিটিভ কোনো আউটপুট পাব। প্রকৃত দোষী কে তা বেরিয়ে আসবে।”

তবে ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, যে দিক দিয়ে বিমানটির রানওয়েতে নামার কথা ছিল, পাইলট নেমেছেন তার উল্টো দিক দিয়ে।

নেপালি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ১৬ বছরের পুরনো ওই উড়োজাহাজের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করেছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী খড়গা প্রসাদ শর্মা অলি।

নেপালে বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করতে ইতোমধ্যে কাঠমান্ডু পৌঁছে গেছেন ইউএস বাংলার সিইও, ডিএমডিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

কামরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের একটা টিম কাঠমান্ডু পৌঁছে গেছে, ডিসিশনের ব্যাপারে আমরা অনেক বেশি রিলাক্স থাকব। আমাদের অনেক সহজেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারব।”

মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ৭ জন প্রতিনিধি ও ৪৬ জন স্বজন নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইট কাঠমান্ডু পৌঁছেছে।

কামরুল সাংবাদিকদের বলেন, নিহতদের মরদেহ যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা স্বজনদের হাতে তুলে দেবেন। নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার জন্য ইউএস বাংলা প্রস্তুত।

ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফ্লাইট ক্যাপ্টেন আবিদের দ্বন্দ্বের খবর গণমাধ্যমে এলে সেটাকে ‘ভুল মেসেজ’ বলে অভিহিত করেছেন কামরুল।

তিনি বলেন, “ককপিটে বসে ফ্লাইট শুরু করার আগ মুহূর্তেও যদি পাইলট মনে করেন তিনি ‘নট ফিট ফর দ্য ফ্লাই’ তবে কোনো অথরিটির রাইট নাই তাকে প্রেসার দেয়। এসব মেসেজের ভেতরে ভুলভ্রান্তি আছে।”

২০১৫ সালে সৈয়দপুরে ইউএস বাংলার ফ্লাইট দুর্ঘটনায় পড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেই ফ্লাইটের সঙ্গে নেপালের ঘটনার কোনো ধরনের লিঙ্ক বা সামঞ্জস্য নাই। এই এয়ারক্রাফট সেম এয়ারক্রাফট না।”