‘বিকাশের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনছে আলিবাবা’
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনছে চীনা বহুজাতিক কোম্পানি আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আলিপে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা র্যাডিসন হোটেলে একটি চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে বিকাশের মূল প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান।
সেলিম বলেন, বিকাশের শেয়ারের ৫১ শতাংশ ব্র্যাক ব্যাংকেরই থাকছে। বাকি ৪৯ শতাংশ শেয়ার মালিকদের মধ্যে মানি ইন মোশন (মিম), ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও বিল অ্যান্ড মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের ছেড়ে দেওয়া শেয়ার থেকে পাবে আলিপে।
প্রযুক্তি বিনিময় নিয়ে আলিবাবার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়ালের সঙ্গে বিকাশের ওই চুক্তি সই হয়।
বিকাশের পক্ষে এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির এবং অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়ালের পক্ষে এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডগলাস ফেগান চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) আবদুল কাদের জোয়ার্দার সাংবাদিকদের বলেন, বিল অ্যান্ড মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন বিকাশের প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ারের মালিক। আর মিমের অংশ ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং আইএফসির ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।
“এর মধ্যে মিম প্রাথমিকভাবে এর ৫ দশমিক ৯ শতাংশ শেয়ার ছাড়ছে আলীবাবার কাছে। আর আইএফসি ছাড়ছে দুই শতাংশ। আলী বাবার পাওয়া বাকি শেয়ারগুলো আসবে প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার থেকে।”
ব্র্যাক ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম ধাপে ১৬ শতাংশ শেয়ার পাচ্ছে আলিবাবা, বাকি চার শতাংশ পরে পাবে।
“ব্যাংকের প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশন (পিএসআই) সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পরই শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। পুরো কার্যক্রম শেষ হতে ১৫ থেকে ১৮ মাস লাগতে পারে।”
বৈশ্বিক জায়ান্ট আলিবাবার বাংলাদেশে বিনিয়োগকে ‘মাইলফলক’ আখ্যায়িত করে ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি বলেন, “তারা অনেক বড় একটি কোম্পানি। তাদের প্রযুক্তি, প্রকৌশলসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা আমরা পাব।
“সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাংলাদেশে কৌশলগত বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। এটা আমাদের অর্থনীতি ও ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে অনেক বড় স্বীকৃতি।”
এর আগে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়ালের নির্বাহী চেয়ারম্যান এরিক জিং বলেন, “বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অনেক দূর এগিয়েছে। আর বিশ্বের ৪০টি দেশের ৮০ কোটি গ্রাহককে সেবা দিয়ে যাচ্ছে অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়াল। প্রযুক্তির নতুন নতুন ফিচারগুলো এখানেও প্রসারিত করতে চাই।”
মোবাইলের পাশাপাশি অ্যাপ ও কিউআর কোডের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন চালু হলে গ্রাহকদের জন্য অনেক সহজ হবে বলে পরামর্শ দেন তিনি।
বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির বলেন, “আমাদের অর্থ লেনদেনের পয়েন্ট এখন হাঁটার দূরত্বে চলে এসেছে। সেটাকে আরো সহজতর করতে আমরা এই চুক্তি করেছি। কারণ চীন গত ১৫-২০ বছরে অনলাইনের মাধ্যমে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনে অনেক উন্নতি করেছে। আমরাও সেটার সহায়তা এখানে নিয়ে আসতে চাই।”
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়াল বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে জানিয়ে বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা যেহেতু নাই, তারা সেটা এখানেও ব্যবহার করে কি-না আমরা দেখব।”
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “প্রযুক্তি বিনিময় আমরা অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়ালের মাধ্যমে করতে চাই। লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারেও এটা ভূমিকা রাখবে।”