ক্রিকেট
কালবৈশাখী আর গেইল ঝড়ে তছনছ নাইটদের সাজানো বাগান
দু’রকম আশঙ্কাই আগে থেকে ছিল। দুটিই সত্যি হলো। প্রথমটা কালবৈশাখী। আর দ্বিতীয়টা বাইশ গজে খতরনাক গেইল ঝড়। আর এই দুয়েই তছনছ হয়ে গেল নাইটদের সাজানো বাগান। আপন গতিতে চলতে থাকা কেকেআরের বিজয়রথ ফের ধাক্কা খেল। শনিবার বৃষ্টি-বিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইসের সুবিধা পাওয়ায় জয় পকেটে পুরল প্রীতি জিন্টার দল।
গত ম্যাচেই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে অতিমানবীয় একটি ইনিংস খেলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন গেইল। তারপরই হুঙ্কার তুলেছিলেন ‘ইউনিভার্সাল বস’। দলের মেন্টর বীরেন্দ্র শেহবাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, তাকে দলে নিয়ে আইপিএলের সম্মানরক্ষা করেছেন বীরু। সত্যিই তো, আইপিএলে বড় রানের ইনিংসের আলোচনা হলেই যে গেইলের উদাহরণ টানা হয়, তারই কিনা এবার কোনো দলে ঠাঁই হচ্ছিল না! শেষমেশ শেহবাগই তাকে তুলে নেন। আর এমন তাচ্ছিল্যের বদলাই যেন প্রতিটি ম্যাচে নিয়ে চলেছেন ক্যারিবিয়ান তারকা। প্রাক্তন কেকেআর ব্যাটসম্যান যে বর্তমান নাইটদের সামনেও জ্বলে উঠতে চাইবেন, তেমনটা আগে থেকেই আন্দাজ করা গিয়েছিল। চলতি আইপিএলের এই ম্যাচটি ঘিরে তাই কলকাতাবাসীর উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এদিন শুধুই গেইল না, তার সঙ্গে জুটি বেঁধে চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলেন এক ভারতীয় ওপেনার। তিনি লোকেশ রাহুল। দুই ওপেনারের মধ্যে দুর্দান্ত বোঝাপড়া মন ভরাল দর্শকদের। কিন্তু মনের কোণে হতাশাও রইল। না, শুধুই রাসেলের বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি দেখা হল না বলে নয়। বড় রানের লক্ষ্য তৈরি করেও বৃষ্টির দাপটে গেইলদের কাছে পরাস্ত হতে হল বলে। বৃষ্টির কারণে পাঞ্জাবের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ১২৫ রান।
তবে কি গেইলকে রুখে দেওয়ার আলাদা কোনো হোমওয়ার্ক ছিল না কার্তিকের? পাঞ্জাবের দুই ওপেনারকে কি দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠানো যেত না? দুই পোড়খাওয়া ব্যাটসম্যান শুরুতেই পেয়ে গেলেন অনভিজ্ঞ মাভিকে। ক্ষুদার্ত সিংহের মুখে খাবার তুলে দেয়ার মতো অনেকটা। অথচ সুনীল নারিনের মতো বোলারকে পরে পাঠালেন কার্তিক। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হতেই রাহুলের উইকেটটি তুলে নেন ক্যারিবিয়ান তারকা। গেইলকে আটকাতে তাকে কি আগে পাঠানো যেত না? ঘরের মাঠে কেকেআরের হারের পর এমন প্রশ্ন উঠেই যাচ্ছে। ক্রিস লিন ও কার্তিকের সুন্দর ইনিংসও এরপর অর্থহীন হয়ে গেল। ৯ উইকেটে জিতে রান রেটেও অনেকখানি এগিয়ে গেল অশ্বিনের দল। আর এমন দিনে গালের টোল আরও গভীর হল প্রীতির। বীরের মাঠেই বীরকে হারিয়ে উচ্ছ্বসিত জারা।