হায়দরাবাদের রোমাঞ্চকর জয়ে ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল সাকিব

হায়দরাবাদের রোমাঞ্চকর জয়ে ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল সাকিব
কম রানের পুঁজি নিয়ে জেতাকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলা সানরাইজার্স হায়দরাবাদের এবারের শিকার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে বিরাট কোহলির দলকে হারাতে ব্যাটে-বলে অবদান রেখেছেন সাকিব আল হাসান।

বেঙ্গালুরুকে ৫ রানে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান দৃঢ় করেছে হায়দরাবাদ। ১০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৬। সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে চেন্নাই সুপার কিংস। সপ্তম পরাজয়ের স্বাদ পাওয়া বেঙ্গালুরু ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে ষষ্ঠ স্থানে।  

হায়দরাবাদের দেওয়া ১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৬ উইকেটে ১৪১ রানে থেমে যায় বেঙ্গালুরু। ব্যাটিংয়ে ৩৫ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলার পর বোলিংয়ে ৩৬ রানে ২ উইকেট নেন সাকিব।

হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সোমবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শেষ বলে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় হায়দরাবাদ।

দুই অঙ্কে যেতে পারেননি অ্যালেক্স হেলস। ১৩ রান করে বিদায় নেন শিখর ধাওয়ান। নবম ওভারে ক্রিজে আসেন সাকিব। প্রথম বলেই খোলেন রানের খাতা। যুজবেন্দ্র চেহেলের পরের তিনটি বল খেলেন ডট। 

মইন আলির অফ স্পিনে পরপর দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চাপটা সরিয়ে দেন সাকিব। শরীরের খুব কাছ থেকে কাট করে তুলে নেন নিজের প্রথম চার। বেরিয়ে এসে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে দ্বিতীয়টি।

কাট করে চার হাঁকিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার স্বাগত জানান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে। সেভাবে এক-দুই নিয়ে খেলতে পারায় রানের গতি খুব একটা বাড়াতে পারেননি সাকিব।

তার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬৪ রানের জুটিতে অগ্রণী উইলিয়ামসন। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক ৩৯ বলে দুই চার আর ৫ চারে ৫৬ রান করে ফিরলে ভাঙে প্রতিরোধ গড়া জুটি।  

সঙ্গীকে হারানোর পর মুখোমুখি হওয়া প্রথম তিন বলে দুটি বাউন্ডারি তুলে নেন সাকিব। ডানা মেলতে শুরু করে আবার ফিরে যান নিজের ইনিংস খুব একটা বড় করতে না পেরে। টিম সাউদির স্লোয়ার বলে সুইপ করে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন উমেশ যাদবের হাতে।

চলতি আসরে নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা সাকিব ৩২ বলে ৫টি চারে করেন ৩৫। তার বিদায়ের পর দিক হারায় হায়দরাবাদ। মাত্র ১২ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় তারা।

বেঙ্গালুরুর মোহাম্মদ সিরাজ (৩/২৫) ও সাউদি (৩/৩০) নেন তিনটি করে উইকেট।
তৃতীয় ওভারে আক্রমণে সাকিব। পরপর দুটি বাউন্ডারি হজমের পর বাঁহাতি এই স্পিনার এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন পার্থিব প্যাটেলকে। ভাঙে বেঙ্গালুরুর ২৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।

প্রথম ওভারে ১১ রান দেওয়া সাকিব পরের ওভারে ছিলেন আরও খরুচে। দুই চারের মাঝে এক ছক্কায় সেই ওভার থেকে ১৫ রান নেন বিরাট কোহলি। ওভারের শুরুটা ছিল দারুণ। প্রথম দুটি বল ডট খেলিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু শেষ চার বলে চিত্রটা পাল্টে দেন কোহলি।

দশম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে প্রতিশোধ নেন সাকিব। ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক কোহলিকে। শর্ট থার্ড ম্যানে লাফিয়ে এক হাতে চমৎকার ক্যাচ নেন ইউসুফ পাঠান। ৩৯ রান করে ফিরে যান বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। ম্যাচে ফিরে হায়দরাবাদ। দ্রুত এবি ডি ভিলিয়ার্স ও মইনের বিদায়ে চাপে পড়ে বেঙ্গালুরু।

চতুর্দশ ওভারে শেষবারের মতো আক্রমণে ফিরে সাকিব দেন ৬ রান। পাওয়ার প্লেতে প্রথম দুই ওভারে ২৬ রান দেওয়া বাঁহাতি স্পিনার নিজের শেষ ২ ওভারে দেন মাত্র ১০ রান।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। শেষ বলে ৬। ভুবনেশ্বর কুমারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে পারেননি ডি গ্র্যান্ডহোম (৩৩)। হয়ে যান বোল্ড। দারুণ এক শেষ ওভারে হায়দরাবাদের জয়ে বড় অবদান ভুবনেশ্বরের।

তবে ম্যাচের একমাত্র ফিফটি আর চমৎকার অধিনায়কত্বের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন উইলিয়ামসন।

ট্যাগ :
সাকিবআইপিএল