ইতালিকে হারিয়ে শুরু আর্জেন্টিনার
লিওনেল মেসিকে কেন্দ্রে রেখে বিশ্বকাপের ছক কষছেন হোর্হে সাম্পাওলি। পুরোপুরি ফিট না থাকায় মাঠে নামলেন না দলের সেরা তারকা। তবুও সহজ জয় পেল আর্জেন্টিনা। ইতালিকে হারিয়ে শুরু করল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি।
প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে গোল দুটি করেন এভার বানেগা ও মানুয়েল লানসিনি।
গুরুত্বপূর্ণ অনেক খেলোয়াড় না থাকলেও প্রথমার্ধে ইতালিকে দাঁড়াতেই দেয়নি আর্জেন্টিনা।
ম্যানচেস্টারের ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শুক্রবার নবম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় ইতালি। লরেন্সো ইনসিনিয়ের দারুণ ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মর্কো পারোলো। প্রথমার্ধে আর কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি লুইজি ডি বিয়াজিওর শিষ্যরা।
গত ১৩ নভেম্বর ঘরের মাঠে বাছাইপর্বের প্লে-অফের ফিরতি লেগে সুইডেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বিশ্বকাপের স্বপ্ন ভাঙে ইতালির। তারপর এই প্রথম মাঠে নামল দলটি। একের পর এক আক্রমণে তাদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন আনহেল দি মারিয়া।
ষোড়শ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। গনসালো হিগুয়াইনের কাট ব্যাক কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন দানিয়েলে রুগানি। সেই কর্নারে ফেদেরিকো ফাসিওর হেড থেকে দলকে রক্ষা করেন জানলুইজি বুফ্ফন।
মেসির পর কেন তাকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে সৃষ্টিশীল ফুটবলার বলা হয় তা আরেকবার দেখালেন দি মারিয়া। বাঁ প্রান্ত দিয়ে একের পর এক আক্রমণ গড়লেন; তবে তার ক্রসগুলো খুঁজে পেল না হিগুয়াইনকে।
আক্রমণের ঝাপটা সামলাতে বেশিরভাগ সময় ইতালির সব খেলোয়াড় ছিল নিজেদের অর্ধে। পাল্টা আক্রমণে তারা ভাঙার চেষ্টা করেছিল আর্জেন্টিনার রক্ষণ; কিন্তু সুবিধে করতে পারেনি। প্রতিবারই আগেভাগে আক্রমণগুলো ব্যর্থ করে দেয় সাম্পাওলির শিষ্যরা।
৪০তম মিনিটে দূরপাল্লার শটে ভাগ্য পরীক্ষা করেন লিয়েন্দ্রো পারদেস। তার বুলেট গতির শট পোস্টে লেগে বাইরে চলে যায়।
চার মিনিট পর ইতালির ত্রাতা বুফ্ফন। অসংখ্য পাসে গড়া আক্রমণের শেষটায় শট নেন নিকোলাস তাগলিয়ফিকো। দারুণ দক্ষতায় তার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক।
শেষ মিনিটে দি মারিয়ার নৈপুণ্যে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান হিগুয়াইন। কিন্তু একা পেয়েও ক্লাব সতীর্থ গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ইতালি। তৈরি করে বেশ কয়েকটি সুযোগ। তবে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় তার একটিও খুঁজে পায়নি ঠিকানা।
দ্বিতীয়ার্ধে ৪৯তম মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটা হাতছাড়া করেন ইনসিনিয়ে। পারেদসের ব্যাক পাস ধরে অরক্ষিত সতীর্থকে বাড়ান চিরো ইম্মোবিলে। গোলরক্ষক উইলি কাবাইয়েরোকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি ইনসিনিয়ে।
৫৮তম মিনিটে আর্জেন্টিনার ত্রাতা কাবাইয়েরো। ইম্মোবিলের ইনসিনিয়েকে দেওয়া পাস কোনোমতে হাত বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন এই গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর মার্কো ভেরাত্তির চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন তিনি।
৬৪তম মিনিটে দি মারিয়া ও পারদেসকে তুলে নিয়ে দিয়েগো পেরোত্তি ও বানেগাকে নামান সাম্পাওলি।
৬৮তম মিনিটে আবার দলকে হতাশ করেন ইনসিনিয়ে। ভেরাত্তির উঁচু করে বাড়ানো বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বিপজ্জনক জায়গায় পেয়ে যান এই ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষককে একা পেয়েও পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
এই অর্ধের খেলার ধারার বিপরীতে ৭৬ তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন বানেগা। লো সেলসোর সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে জোরালো শটে বুফ্ফনকে ফাঁকি দেন তিনি।
৮৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লানসিনি। হিগুয়াইনের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে বল জালে পাঠান ওয়েস্ট হ্যামের এই ফরোয়ার্ড। দুই জন খেলোয়াড় ছিলেন তার সামনে কিন্তু কেউ চ্যালেঞ্জ করেননি। উঁচু শটে বল ধরার কোনো সুযোগই ছিল না বুফ্ফনের।
আগামী মঙ্গলবার আরেক সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্পেনের মুখোমুখি হবে হোর্হে সাম্পাওলির দল।