অবশেষে জয়ের ধারায় ফিরল আর্সেনাল
রোববার ওয়াটফোর্ডকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে প্রিমিয়ার লীগে তিন ম্যাচ পরে জয়ের ধারায় ফিরেছে আর্সেনাল। এর মাধ্যমে কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারকে কিছুটা হলেও স্বস্তি উপহার দিতে পেরেছে শিষ্যরা।নিজের চাকরি বাঁচানো নিয়ে দারুণ চাপের মধ্যে থাকা ওয়েঙ্গারের জন্য অবশ্য বৃহস্পতিবার ইউরোপা লীগে এসি মিলানের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচটা দারুন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এর মাধ্যমে এবারের মৌসুমে একের পর এক ব্যর্থতার দায়ে চাপা পড়া অভিজ্ঞ এই ফ্রেঞ্চম্যানের জন্য কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরেছে। সান সিরোতে অবশ্য শেষ ১৬টি ম্যাচে জয়ের ধারা বজায় রাখার ধারাবাহিকতাও এখানে বাড়তি উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করেছে। আর তারই রেশ ধরে এমিরেটস স্টেডিয়ামে পরপর তিনটি লীগ ম্যাচে ধরাশায়ী আর্সেনাল অবশেষে নিজেদের খুঁজে পেয়েছে।
ম্যাচের শুরুতেই শাখোড্রান মুস্তাফির গোলে এগিয়ে যাওয়া, এরপর পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াংয়ের গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় গানার্সরা। বিপরীতে ওয়াটফোর্ড অধিনায়ক ট্রয় ডিনের দ্বিতীয়ার্ধের পেনাল্টি আটকে দিয়ে দলকে আরো উজ্জীবিত করে তুলেন গোলরক্ষক পিটার চেচ। অথচ এই আর্সেনালের স্পিরিট নিয়ে মৌসুমের শুরুতে প্রশ্ন তুলেছিলেন ডিনে। ৭৭ মিনিটে হেনরিখ মাখিটারিয়ানের গোলে দলের জয় নিশ্চিত হয়। যদিও ম্যাচের শেষের দিকে মুস্তাফির ইনজুরির কারণে মাঠ ত্যাগ কিছুটা হলেও ওয়েঙ্গারকে ভাবিয়ে তুলেছে।
সব ধরনের প্রতিযোগিতায় গত ১৪টি ম্যাচের মধ্যে আটটিতেই পরাজিত আর্সেনাল এই জয় সত্তেও টেবিলের ষষ্ঠ স্থানেই রয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা টটেনহ্যামের থেকে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩।
ইউরোপা লীগে জয়ী হতে পারলে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লীগে খেলা নিশ্চিত হবে। শীর্ষ চারে থেকে লীগ শেষ করতে পারলে যেখানে সরাসরি চ্যাম্পিয়নস লীগের স্থানটা পাওয়া যেত সেখানে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই ওয়েঙ্গার বরাবরের মতই কন্টিনেন্টাল প্রতিযোগিতার ওপরই বেশী জোড় দিচ্ছেন। আগামী বৃহস্পতিবার মিলানের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবে ওয়েঙ্গার বাহিনী। সে কারণেই গতকাল মূল একাদশে ছিলেন না এ্যারন রামসে, লরেন্ট কোসিনলে ও জ্যাক উইলশায়ার।
একমাত্র স্বীকৃত তারকা হিসেবে কাল ম্যাচ শুরু করেছেন অবামেয়াং। প্রথম গোলটি গ্যাবনীজ এই স্ট্রাইকার প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু মেসুত ওজিলের পাস থেকে অবামেয়াংয়ের শট সরাসরি ওয়াটফোর্ট গোলরক্ষক ওরেস্টিস কারনেজিসের হাতে ধরা পড়ে। ওয়েঙ্গারের উপর ক্ষিপ্ত আর্সেনাল সমর্থকরা এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ম্যাচ বর্জন করায় নিজেদের মাঠে প্রায় অনেক আসনই শূন্য পড়ে ছিল। কিন্তু মাঠের বাইরের এসব বিষয় নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয় ওয়েঙ্গার ও তার শিষ্যরা, যার প্রমাণ তারা মাঠে দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আট মিনিটেই দলকে এগিয়ে দিয়ে দারুণ এক ম্যাচের আভাস দেন মুস্তাফি। ওজিলের দারুন এক ফ্রি-কিক থেকে মুস্তাফি জোড়ালো হেডে আর্সেনালকে এগিয়ে দেন। এরপর অবশ্য চেচকে বেশ কয়েকবার পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আবদুলায়ে ডোকোরের লো স্ট্রাইক দারুণভাবে আটকে দেন চেচ। রিচারলিসন ও রবার্তো পেরেইরার শটও গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৯ মিনিটে অবামেয়াং আর ভুল করেননি। হেনরিখ মাখিটারিয়ানের সহয়াতায় অফ সাইড ট্র্যাপ ফাঁকি দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অবামেয়াং। জানুয়ারিতে ক্লাব রেকর্ড মূল্যে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে আর্সেনালে আসার পরে এটা তার তৃতীয় গোল। ৬২ মিনিটে পেরেইরাকে ফাউলের অপরাধে মেইটল্যান্ড-নাইলের বিপক্ষে আদায় করা পেনাল্টি থেকে ডিনে গোল করতে ব্যর্থ হলে ওয়াটফোর্ডের আশা শেষ হয়ে যায়। এই নিয়ে প্রিমিয়ার লীগে ২০০তম পেনাল্টি সেভের রেকর্ড গড়লেন চেচ। ৭৭ মিনিটে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোল করে মাখিটারিয়ান দলের জয় নিশ্চিত করেছেন।