সৌদি আরব-ইরান যুদ্ধের শঙ্কা যুবরাজের

সৌদি আরব-ইরান যুদ্ধের শঙ্কা যুবরাজের
পরমাণু কর্মসূচি থেকে ইরানকে নিবৃত করা না গেলে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ হতে পারে। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে এ যুদ্ধ হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। যুক্তরাষ্ট্র সফররত বিন সালমান ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মহলকে ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বিন সালমান বলেন, ‘সৌদি আরবের সাথে সশস্ত্র সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য আমাদের অবরোধ আরোপে সফল হতে হবে। তাতে সফল না হলে, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ইরানের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারি।’


উল্লেখ্য, বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ইরান, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য, জার্মানি এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ওই চুক্তি বাতিল করার চেষ্টা করছেন। বিন সালমান বলেন, ওই চুক্তির ফলে খামেনির সরকার আরব দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ পেয়েছে। পরমাণু চুক্তির পর ইরান সিরিয়া ও ইরাকে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তারা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধা ও বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করছে।

সিরিয়া থেকে শিগগিরই সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের

গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে ‘শিগগির’ স্বদেশের সামরিক বাহিনী ফিরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের জন্য লড়াইরত বিদ্রোহীদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট।

বৃহস্পতিবার ওহাইও অঙ্গরাজ্যের একটি র্যালিতে বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা শিগগির সিরিয়া থেকে সরে আসব। এখন অন্যরা এই ময়দানের দেখাশোনা করুক।’ তিনি সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যপ্রাচ্য-নীতির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে হাজার হাজার (ট্রিলিয়ন) কোটি ডলার খরচ করে এলেও প্রাপ্তি ‘শূন্য’।’’ মার্কিন সেনারা সিরিয়াকে আইএসের নরক থেকে তুলে এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (আইএস) সেখানে যে খেলাফতের কথা বলে, আমরা শতভাগ সেই খেলাফত থেকে ফিরিয়ে নিচ্ছি (সিরিয়াকে)।

তবে ‘শিগগির’ বললেও সেনা প্রত্যাহারের ঠিক দিনক্ষণ বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমনকি সেনা প্রত্যাহারের সাথে সাথে সিরিয়ায় আইএসের ওপর চলতে থাকা মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বন্ধ হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো কথাও স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। আরব বসন্তের জেরে ২০১১ সালে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশারবিরোধী যে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়, তাতে জড়িয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়াসহ বিশ্ব রাজনীতির পরাশক্তিরা। যুক্তরাষ্ট্র পক্ষ নেয় বাশারবিরোধী বিদ্রোহীদের। আর রাশিয়া পক্ষ নেয় বাশারের অনুগত বাহিনীর।

এই গৃহযুদ্ধের মধ্যে সিরিয়া ও এর পাশের ইরাক দখল করে খেলাফতের ঘোষণা দেয় ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আইএস দমনের নামে সরাসরি যুদ্ধে নেমে যায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা জোট এবং রাশিয়াও। কিন্তু পর্যবেক্ষকরা বরাবরই বলে আসছিলেন, মার্কিন বাহিনী আইএসবিরোধী হামলার আড়ালে বাশারের অনুগত বাহিনীকে কোণঠাসা করে দিচ্ছে, আর রুশ বাহিনী নির্মূল করছে বিদ্রোহীদের। সম্প্রতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা পূর্ব গৌতায় বিমান হামলায় প্রায় হাজারখানেক বেসামরিক লোকের প্রাণহানি হলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ফের বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগে আসে।