মধ্যপ্রাচ্য
সিরিয়া নিয়ে জোট বাঁধছে তুরস্ক-ইরান-রাশিয়া
সিরিয়ার বিদ্যমান সঙ্কট নিরসনে তুরস্ক, রাশিয়া ও ইরানের প্রেসিডেন্ট গতকাল ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে বসেছেন।
সিরিয়া ইস্যুতে ছয় মাসের মধ্যে এটা তাদের দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলন। তুরস্কের আঙ্কারায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহিনী এতে অংশ নিচ্ছেন। সিরিয়া সংকটের বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকটি আয়োজন করা হয়েছে।
সিরিয়ার বিষয়ে প্রথম ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনটি হয়েছিল গত বছর নভেম্বর মাসে কৃষ্ণ সাগর উপকূলীয় শহর সাচিতে।
তিন নেতা মূলত কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় শান্তি আলোচনার অংশ হিসাবে এই সম্মেলন করছেন। আস্তানার পাশাপাশি জেনেভাতেও জাতিসঙ্ঘের সমর্থনে সিরিয়া বিষয়ে আরেকটি শান্তি সংলাপ হয়। এই দেশ তিনটি ওই সংলাপের বিরোধিতা করেছে। তিন দেশের ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থ থাকলেও তিন দেশ সিরিয়াকে পশ্চিমাদের প্রভাবমুক্ত রাখতে একত্রে কাজ করতে চায়। বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ পরিণতি পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুহারা হয়েছেন এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ। সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতির উপায় খুঁজতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দেশ তিনটি শান্তি আলোচনায় বসেছিল। তবে তা কার্যকর হয়নি। গত নভেম্বরে মস্কোতে প্রথমবার বৈঠক করেন দেশ তিনটির প্রেসিডেন্ট। ওই বৈঠকের পরই সিরিয়ার আফরিনে কুর্দি অবস্থানে হামলা জোরালো করে তুরস্ক। কুর্দি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ করতে তুরস্ক এখনো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিপে অবস্থান নিচ্ছে। বাশার আল আসাদকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া ও ইরান। সিরিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী তিনপরে আলাদা এজেন্ডা রয়েছে।
ইরান ও রাশিয়া সিরিয়ায় শিয়াদের শাসন সংহত করতে চায়। তবে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা কোনও সমঝোতায় পৌঁছায়নি। সিরিয়ায় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনটি প হলো তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীরা, যুক্তরাষ্ট্র্র সমর্থিত সিরিয়ার কুর্দি বাহিনী ও প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থক ইরান ও রাশিয়া। তুরস্ক চায় কুর্দিদের পরাজিত করতে। বাশার সরকার তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীদের দমন করে যুক্তরাষ্ট্রকে বাইরে রাখতে চায়। আর যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে পরাজিত করে ওই অঞ্চলে তাদের কর্তৃত্ব খর্ব করতে চায়। রাশিয়াকেও নিরাপদ দূরত্বে রাখতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।