চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবিতে সমাবেশ
চাকরিতে ঢোকার সময়সীমা ৩৫ বছর না করা হলে বেকার থেকে এরকম ভিক্ষা করতে বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি। ছবি:মাহমুদ জামান অভি
বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রায় একশ চাকরিপ্রত্যাশী ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ’ ব্যানারে শনিবার রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বেলা ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সমাবেশ করেন।
সেখানে এই আন্দোলনের সমন্বয়কারী সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু যখন ৪৫ বছর ছিল তখন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ছিল ২৭ বছর, যখন ৫০ ছাড়াল তখন বয়সসীমা হল ৩০ বছর।
চাকরির বয়সীমা ৩৫ বছর করার দাবি আদায়ে রাস্তায় শুয়ে এক শিক্ষার্থী। ছবি:মাহমুদ জামান অভি চাকরির বয়সীমা ৩৫ বছর করার দাবি আদায়ে রাস্তায় শুয়ে এক শিক্ষার্থী। ছবি:মাহমুদ জামান অভি “বর্তমানে আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২ বছর হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা এখনও অপরিবর্তিতই রয়ে গেছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে এই পরিবর্তন আনা আবশ্যক।”
সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে বেসরকারি ব্যাংকসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও অভিজ্ঞতা ছাড়া ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে নিয়োগ না দেওয়ায় বেসরকারি ক্ষেত্রেও চাকরির সুযোগ কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বক্তারা। তাদের ভাষ্য, বাংলাদেশে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করতে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বয়স ২৬-২৭ বছর হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে চাকরির বাজারে তিন-চার বছর প্রতিযোগিতা করে কর্মসংস্থান করা ‘দুঃসাধ্য’ হয়ে পড়ে।
সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময়সীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ঢাকার শাহবাগের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা। ছবি:মাহমুদ জামান অভি সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময়সীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ঢাকার শাহবাগের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা। ছবি:মাহমুদ জামান অভি সংগঠনের সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১২ সাল থেকে এই সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন করছেন তারা।
“এতদিন ধরে মাঠ পর্যায়ে শান্তিপূর্ণভাবে এই যৌক্তিক দাবি জানিয়ে যাচ্ছি। বাস্তব দিক বিবেচনা করে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া উচিত।”
তিনি জানান, আগামী ২১ এপ্রিল শাহবাগ মোড় থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাবেন তারা।
সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময়সীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ঢাকার শাহবাগের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা। ছবি:মাহমুদ জামান অভি সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময়সীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ঢাকার শাহবাগের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা। ছবি:মাহমুদ জামান অভি “আমরা তো যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাই না, পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হচ্ছে না চাকরি খোঁজার জন্য। আমরা কী আর করব, রিকশা-ই চালাই!”
সরকারি কবি নজরুল কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করা কামরুল ইসলাম সমাবেশে বলেন, “তিন মাস আগে নিয়ম অনুযায়ী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পার হয়ে গেছে আমার। এখনও বেকার ঘুরছি।
“উন্নত বিশ্বের দিকে তাকান, সবাই যুব সমাজকে যেভাবে পারে কাজে লাগাচ্ছে। আশপাশের সব দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অনেক বেশি। আমাদের সরকার অন্যান্য সেক্টরে আমাদের তুলনা যেখানে উন্নত বিশ্বের সাথে টানে, সেখানে এই একটা জায়গায় কেন অবিবেচনা?”