অভিনন্দন বাংলাদেশ...
ম্যাচে বাংলাদেশ দলের উল্লাস।
নিদাহাস ট্রফি জয় করা হলো না বাংলাদেশের
হারতে হলো এক দিনেশ কার্তিকের কৃতিত্বের কাছেই
১৬৬ রানের পুঁজি নিয়ে সাকিবদের লড়াইটা ছিল দুর্দান্ত
এই হার গৌরবের—এটা বলাই যায়
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সব সময় শিরোপা উঁচু করে তুলে ধরতে হয় না। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মানুষের হৃদয়ের আসনে জায়গা করে নেওয়া যায় শিরোপা না জিতেই। ভারতের বিপক্ষে হেরে নিদাহাস ট্রফির চকচকে ট্রফিটা নাই-বা হাতে তুলতে পারলেন সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। কিন্তু দুর্দান্ত লড়াইয়ে মানুষের হৃদয়টা তো জয় করে নিয়েছেন তাঁরা! শিরোপা তো তাঁরা প্রায় জিতেই গিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের কাছেই পরাজিত তাঁরা। এমন হারও তো অনেক গৌরবের, অনেক আনন্দের। বাংলাদেশকে অভিনন্দন।
নিদাহাস ট্রফিতে যাত্রাটাই তো ছিল অনেক শঙ্কা নিয়ে। ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজে শিরোপা জিততে না পারার ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের হার। গোটা দলের মানসিক অবস্থা ছিল বিধ্বস্ত। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের চোট দলের আত্মবিশ্বাসটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল ভালোভাবেই। সেই অবস্থা থেকেই তারা লঙ্কানদের বিপক্ষে দুটি দুর্দান্ত জয় উপহার দিল দেশের মানুষকে। ফাইনালে উঠে ভীতি ছড়াল শক্তিশালী ভারতীয় শিবিরে। খেলায় একজনকে হারতে হবে বলেই যেন ফাইনালে হারল বাংলাদেশ। আরও একবার ফাইনালে হারের কষ্ট পেতে হলেও ক্রিকেটপ্রেমীরা গর্বই করছেন ক্রিকেটারদের নিয়ে।
ফাইনালে যেন দুটি প্রতিপক্ষের সঙ্গেই লড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। শুক্রবারের ম্যাচে নানা নাটকীয় ঘটনা আর শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহর বীরত্বে শ্রীলঙ্কাকে হারানোতেই হয়তো স্বাগতিক দর্শকেরা চলে গিয়েছিল বিপক্ষে। পরাক্রমশালী ভারতীয় দলের সঙ্গে লড়াইটা হয়েছে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সঙ্গেও। ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমকে শেষ বল পর্যন্ত উৎকণ্ঠায় রাখাও তো কম কথা নয়। অনেক ব্যবহারে কথাটা ক্লিশে শোনাতে পারে, কিন্তু সত্যিকার অর্থেই কাল দিনের শেষে জিতেছে ক্রিকেটই। ক্রিকেটকে জেতানোর জন্য কৃতিত্ব দুই দলেরই। এর মধ্যে বাংলাদেশ নিজেদের অংশটা নিয়ে গর্ব তো বোধ করতে পারেই।
এ নিয়ে পাঁচটি ফাইনাল হারল বাংলাদেশ। দুঃখ হচ্ছে? কষ্ট হচ্ছে? হতাশ আপনি? আশা রাখুন। কে জানে, ছোট ছোট এই ফাইনালগুলো হেরেই হয়তো অনেক বড় ফাইনাল জয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশ। সে দিনটার জন্য অপেক্ষা কিন্তু আনন্দেরই।