হিগুয়াইন ও দিবালা—এই দুই বাঁচালেন আর্জেন্টাইন

হিগুয়াইন ও দিবালা—এই দুই আর্জেন্টাইনে জুভেন্টাসের উত্তরণ ঘটেছে শেষ আটে। ছবি: এএফপি
 গত চার বছরে তৃতীয়বারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে জুভেন্টাস
শেষ ষোলো ফিরতি লেগে টটেনহামকে ২-১ গোলে হারিয়েছে অ্যালেগ্রির দল
গোল করেছেন হিগুয়াইন ও দিবালা
চ্যাম্পিয়নস লিগ নকআউট পর্বে এই প্রথম কোনো ইংলিশ ক্লাবকে হারাল জুভেন্টাস
চ্যাম্পিয়নস লিগে ইংলিশ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে বার্সেলোনাই সবচেয়ে সফল। ২৩ ম্যাচ জিতেছে কাতালান ক্লাবটি। এরপর বায়ার্ন মিউনিখ (১৫) ও রিয়াল মাদ্রিদ (১১)। ৯ ম্যাচ জিতে চতুর্থ জুভেন্টাস কাল রাতের আগ পর্যন্ত আসরটির নকআউট পর্বে কখনো কোনো ইংলিশ ক্লাবকে হারাতে পারেনি!
একটু অবাক লাগারই কথা। তুরিনের ‘ওল্ড লেডি’রা একে তো ইতালির অন্যতম সফল ক্লাব, পাশাপাশি গত তিন মৌসুমে দুবার ফাইনাল খেলা দল। অথচ নকআউট পর্বে ইংলিশ ক্লাবের মুখোমুখি হলেই দলটির কী যেন হতো! কাল রাতে সেই ‘জুজু’ কেটেছে। শেষ ষোলো ফিরতি লেগের এ ম্যাচেও অবশ্য ‘ফাঁড়া’ ছিল জুভেন্টাসের। মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রির দল ছিটকে পড়ার শঙ্কায় পড়েছিল ম্যাচের ৪০ মিনিটের মধ্যে।
টটেনহাম হটস্পার্সের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথম লেগ ২-২ গোলে ড্র করেছিল জুভেন্টাস। কাল ওয়েম্বলিতে ফিরতি লেগের ৩৯ মিনিটের মাথায় গোল করেন ‘স্পার্স’দের দক্ষিণ কোরিয়ান ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিন। ব্যস, তখন থেকেই জিয়ানলুইজি বুফন সমর্থকদের ‘কাউন্ট ডাউন’-এর শুরু। 
জুভেন্টাসের চিরসবুজ এ অধিনায়ক গত অক্টোবরে বলেছিলেন, দল এবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে না পারলে মৌসুম শেষেই গ্লাভস তুলে রাখবেন। না, বুফনকে বোধ হয় আরেকটু দেরি করতেই হচ্ছে। তাঁর সতীর্থরা কাল সাড়ে তিন মিনিটের ‘ম্যাজিক’ দেখিয়ে জুভেন্টাসকে যে তুলেছেন কোয়ার্টার ফাইনালে।
প্রথমার্ধে টটেনহাম নয় জুভেন্টাসেরই এগিয়ে থাকার কথা ছিল। ১৭ মিনিটে তাঁদের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ডগলাস কস্তা টটেনহামের বক্সে ফাউলের শিকার হলেও রেফারির চোখ এড়িয়ে যাওয়ায় প্রাপ্য পেনাল্টি পায়নি। অ্যালেগ্রির শিষ্যরা এই অবিচারের জবাব দিয়েছে ৬৪ থেকে ৬৭ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে! 
৬৪ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে ক্রস পেয়ে হেড করেছিলেন সামি খেদিরা। শূন্যে থাকা বল পা বাড়িয়ে আলতো টোকায় জালে পাঠান জুভেন্টাসের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড গঞ্জালো হিগুয়াইন। টটেনহামের গোলপোস্ট তাক করে ম্যাচে এটাই ছিল জুভেন্টাসের প্রথম শট! ইংলিশ ক্লাবটিকে এ ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ না দিয়ে ২ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড পর তাঁরা গোল আদায় করেছে দ্বিতীয় শট থেকেও।
গোলটা কিন্তু ‘মেড বাই আর্জেন্টাইনস’—হিগুয়াইনের দারুণ পাস পেয়ে দ্রুতলয়ে টটেনহামের বক্সে ঢুকে গোল করেন পাওলো দিবালা। চ্যাম্পিয়নস লিগে এ মৌসুমে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শট (২৮) নিয়েও গোল পাচ্ছিলেন না আর্জেন্টাইন এ স্ট্রাইকার। কাল সেই খরা কেটেছে। পাশাপাশি ফিরতি লেগ ২-১ গোলে জিতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানের জয়ে জুভেন্টাসও গত চার বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো উঠল শেষ আটে।
হিগুয়াইন ৬৪ মিনিটে গোল করার সময়ই পরিসংখ্যানের পোকারা হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন, আর যা–ই হোক, জুভেন্টাস অন্তত ম্যাচটা হারছে না। কারণ, আর্জেন্টাইন এ তারকা চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করলে তাঁর দল কখনো হারেনি (১৫ জয়, ৪ ড্র)। সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকল এ ম্যাচেও। চ্যাম্পিয়নস লিগ নকআউট পর্বে প্রথমবারের মতো কোনো ইংলিশ ক্লাবকে হারিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে উঠেছে জুভেন্টাস।
তবে টটেনহামের সান্ত্বনা হতে পারে দুই লেগেই ‘জুভ’দের জালে গোল করা। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের দলগুলোর মধ্যে এবার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে (২১ ম্যাচ) অপরাজিত রয়েছে জুভেন্টাস। এ পথে তারা হজম করেছে মাত্র ৪ গোল, যেখানে ৩ গোলই টটেনহামের!