মিয়ানমার সেনাপ্রধানের মন্তব্যে ‘বিস্মিত’ জাতিসংঘ মহাসচিব
রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমারের সেনা প্রধানের মন্তব্যে ‘বিস্ময়' প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
গত সপ্তাহে উত্তরের কাচিন রাজ্যে এক সেনা সমাবেশের ভাষণে ঊর্ধ্বতন জেনারেল মিন অং হলাইং অতীতের মতো আবারো রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয় অস্বীকার করে তাদের বাঙালি আখ্যা দেন।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অধিবাসী হিসেবে মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, “মিয়ানমারের মানুষদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে তাদের (রোহিঙ্গাদের) কোনো মিল নেই।”
এই ‘বাঙালিরা’ নাগরিকত্ব দাবি করার কারণেই রাখাইনে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মিয়ানমারের জনগণ রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসাবে গণ্য করে। যে কারণে তারা তাদেরকে রোহিঙ্গা নয় বরং ‘বাঙালি’ বলে থাকে।
মিয়ানমার সেনাপ্রধানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার এক বিবৃতিতে গুতেরেস জানান, সেনা প্রধানের এ বক্তব্যে তিনি মর্মাহত।
মিন অংয়ের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে রাখাইনে সংঘাতের মূল কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধানের চেষ্টা নেওয়া এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি ঘৃণার দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করতে মিয়ানমারের নেতাদেরকে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেন গুতেরেস।
তিনি বলেন,“অসহায় ওই সব মানুষদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া ও সাহায্য করা মিয়ানমার সরকারের দায়িত্ব।”
গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা ও পুলিশ ফাঁড়িতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলার পর সেখানে সেনা অভিযান শুরু হয়।
ওই অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সেনাঅভিযান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হলেও নানা জটিলতায় ওই প্রক্রিয়া এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি।