জ্বলতে জ্বলতে পৃথিবীতে ফিরবে চীনের নিয়ন্ত্রণহীন স্পেস ল্যাব
চীনের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিক্ষিপ্ত মহাকাশ গবেষণাগার তিয়ানগং-১। ছবি: রয়টার্স
যোগাযোগবিচ্ছিন্ন চীনের মহাকাশ গবেষণাগার তিয়ানগং-১ চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দশ মিটারের বেশি লম্বা নিষ্ক্রিয় এ মডিউলটির ওজন ৮ টনের বেশি। এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে নিয়মিতভাবে পুনঃপ্রবেশ করা মনুষ্যনির্মিত বস্তুগুলোর তুলনায় অনেক বড়।
২০১৬ সালে গবেষণাগারটির সঙ্গে চীনা কর্তৃপক্ষের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই এটি অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় ছিল। চলতি সপ্তাহে স্পেস ল্যাবটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করতে যাচ্ছে বলে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তিয়ানগংয়ের বেশিরভাগ অংশই বায়ুমণ্ডলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে পুড়ে যাবে। এর অক্ষত কোনো অংশ জনবহুল এলাকায় পড়ার ঝুঁকিও খুবই কম।
“পুনঃপ্রবেশের সময় তাপে মডিউলটির বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে; এরপরও যদি কোনো অংশ টিকে যায় তবে তা সমুদ্রে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি,” বিবিসি নিউজকে এমনটাই বলেন যুক্তরাজ্য স্পেস এজেন্সির প্রধান প্রকৌশলী রিচার্ড ক্রোদের।
ঠিক কোন সময়ে, পৃথিবীর কোন অংশ দিয়ে গবেষণাগারটি পুনঃপ্রবেশ করবে তা পরে জানা যাবে।
বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় স্পেস ল্যাবটির বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যাবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় স্পেস ল্যাবটির বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যাবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের গবেষকরা বলছেন, গবেষণাগারটির সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৪০ শতাংশ (দেড় থেকে সাড়ে ৩ টন) বায়ুমণ্ডল অতিক্রম করার পরও অক্ষত থেকে যেতে পারে; ভূপৃষ্ঠে পড়তে এর যে কোনো ধ্বংসাবশেষকে শত শত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির নেতৃত্বে ১৩টি মহাকাশ সংস্থা তিয়ানগংয়ের আচরণ ও পৃথিবীতে ফেরার পথ পর্যবেক্ষণ করছে।
সম্মিলিতভাবে ইন্টার এজেন্সি স্পেস ডেব্রিস কোঅর্ডিনেশন কমিটি নামে পরিচিত এ সংস্থাগুলো গবেষণাগারটির বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সম্ভাব্য সময় ও স্থান বিষয়ে পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করছে।
মডিউলটির ওপর কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় একেবারে শেষ মুহুর্তে ছাড়া তিয়ানগংয়ের গতিপথ নিয়ে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট বিবৃতি দেওয়ার সম্ভাবনাও কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তিয়ানগংকে মহাশূন্য থেকে অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ৫০তম বৃহদায়তন বস্তু বলছে বিবিসি।
২০১১ সালে নিক্ষিপ্ত এ স্পেস ল্যাবে ভ্রমণ করেছেন চীনের ৬ নভোচারী। নিয়ন্ত্রিত উপায়ে একে কক্ষপথ থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল তিয়ানগংয়ের থ্রাস্টার ব্যবহার করেই একে দক্ষিণ সমুদ্রের দুর্গম এলাকার দিকে নিয়ে যাওয়া।
২০১৬ সালে এ গবেষণাগারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি।