সেলফি শিকারির কবলে রোনালদো। রয়টার্স।
প্রীতিম্যাচে ৩–০ গোলের জয় পায় নেদারল্যান্ড।
২০০১ সালের পর এই প্রথম পর্তুগালের বিপক্ষে দুই গোল করে নেদারল্যান্ড।
কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম জয় পান কোয়েন।
রোনালদো যেন নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন জেনেভার প্রীতিম্যাচে। রিয়াল তারকার মনে যেন রাজ্যের আঁধার জমেছিল তখন। কারণ, গোল পাচ্ছেন না কোনোভাবে। ভক্তরা তো আর এত কিছু বোঝে না! ওই অবুঝ ভক্তদের কেউ-ই ম্যাচের ৬২ তম মিনিটে মাঠে ঢুকে পড়েন। দু-একজন তাঁর সঙ্গে সেলফিও তোলেন। কাল রাতের ম্যাচে রোনালদোর সুখস্মৃতি এটুকুই বলা যেতে পারে| ম্যাচের প্রথম দশ মিনিট ৭৫ ভাগ সময়ে বল পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের পায়েই ছিল। আক্রমণও ছিল বেশ কয়েকটা। আক্রমণ আর বল দখলে রেখে কাজের কাজ হয়নি কিছু। গোলমুখ যেন আঠা দিয়ে আটকে রেখেছিল নেদারল্যান্ড শিবিরের রক্ষণভাগ। অন্যদিকে পর্তুগালের রক্ষণ দ্বিতীয়ার্ধে খানিক শক্ত হলেও প্রথমার্ধে ছিল সাদামাটা। প্রথমার্ধেই ৩-০ তে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে কোনো দল গোল না পাওয়ায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কমলা শিবির। শেষ বাঁশি বাজার আগে ব্যবধানটা ০-৪ হয়নি পর্তুগিজ গোলরক্ষক লোপেজের দুর্দান্ত এক সেভের কারণে-ই।
জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে নেদারল্যান্ড। গ্যালারিতে কমলা রঙের উল্লাস। রয়টার্স।
জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে নেদারল্যান্ড। গ্যালারিতে কমলা রঙের উল্লাস। রয়টার্স।
আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ০-১ গোলে হেরে যাওয়া নেদারল্যান্ড এই ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও প্রথম ১১ মিনিটেই গোল পায়। বক্সের ভেতর ঢুকে নিজেই শট নিতে পারতেন নেদারল্যান্ডের ফন ডিবিক। ‘তাতে গোল পাওয়া যেত না’ এমনটা ভেবেছিলেন দেখেই কিনা বল সতীর্থ খেলোয়াড়কে পাস দিলেন। তাঁর কাছ থেকে আড়াআড়ি ক্রস পেয়ে বল জালে জড়াতে মোটেও ভুল করেননি ডিপে (০-১)। এক গোলে এগিয়ে থেকে নিজেদের গোছানোর কাজ শুরু করে নেদারল্যান্ড। ম্যাচের ৩০ মিনিটে নেদারল্যান্ডের ডিবক্সে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করেন পর্তুগিজ সেনা রোনালদো। তাতে অবশ্য কাজ হয়নি। বরং ৩২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোল হজম করে বসে তাঁর দল। লিভারপুলের সাবেক তারকা বেবেলের অসাধারণ হেডে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ড। ২০০১ সালের পর (২-২) এই প্রথম পর্তুগালের বিপক্ষে দুই গোল করে নেদারল্যান্ড। ম্যাচের ৪০ মিনিট পর্যন্ত একটা শটও গোলমুখে নিতে পারেনি রোনালদো কিংবা তাঁর দলের কোনো খেলোয়াড়। ৪৩ মিনিটে লোপেজের দুর্দান্ত সেভে বেঁচে যায় পর্তুগাল। তবু শেষ রক্ষা হলো না রক্ষণভাগের অদক্ষতায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময় ৪৭ মিনিটে ফন ডিকের ভলি থেকে তিন নম্বর গোল (৩-০) পায় নেদারল্যান্ড। মজার বিষয় হচ্ছে নেদারল্যান্ডের চারটা শটের তিনটাই গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দল গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও গোল পায়নি কেউ। বলার মতো দু-একটা আক্রমণ আর বেপথু শটই ছিল পর্তুগিজদের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কার। ৬১ তম মিনিটে কেনসেলো দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে দশজনের দলে পরিণত হয় পর্তুগাল। ৬৮তম মিনিটে রোনালদোকে তুলে জো মতিনহোকে নামিয়েও কোনো লাভ হয়নি। ম্যাচ শেষের এক-দুই মিনিট আগে দু-একটা ভালো সুযোগ তৈরি করলেও শেষতক হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
কোচ হিসেবে নেদারল্যান্ডের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই কোয়েনের প্রথম জয়। বিশ্বকাপের আগে তার প্রস্তুতিটাও হলো মনের মতো।