‘রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে’ প্রস্তুত চীন: সি চিন পিং

‘রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে’ প্রস্তুত চীন: সি চিন পিং
সি চিন পিং
চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, চীনকে বিচ্ছিন্ন করার যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দেওয়া হবে। চীনে বিভাজন সৃষ্টির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, বিশ্বে নিজের ন্যায়সংগত স্থান ধরে রাখতে শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে’ প্রস্তুত রয়েছে চীন। 

সি চিন পিং দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার পর চীনের পার্লামেন্টে মঙ্গলবার ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) বার্ষিক অধিবেশনের সমাপনীতে তিনি এসব কথা বলেন।

সি চিন পিং বলেন, পৃথিবীতে নিজের অবস্থান পুনরুদ্ধার করতে যেকোনো ধরনের সংঘাত মোকাবিলা করতে প্রস্তুত চীন। 
এনপিসির এবারের অধিবেশনেই ‘কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে চীনের রাষ্ট্রপতি থাকতে পারবে’ বিধানটি তুলে দেওয়ায় সি চিনের আজীবন ক্ষমতায় থাকার পথ খুলে যায়। অধিবেশন শুরুর দিনই তিন হাজারের মতো প্রতিনিধির সম্মতিতে সংবিধানের এই ধারাটি বিলুপ্ত হয়। বক্তব্যে সি চিন পিং তাইওয়ান চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রচেষ্টার ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, তাইওয়ান যদি চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায়, তবে তিনি এমন শিক্ষা দেবেন, যা ইতিহাস হয়ে থাকবে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাইওয়ান প্রশ্নে এই প্রথম কথা বললেন সি। স্বশাসিত তাইওয়ান বরাবরই চীনের জন্য মাথাব্যথার কারণ। চীন এ দেশটিকে তাদের নিজেদের অঞ্চল বলে বিবেচনা করে।

তাইওয়ানের ওপর চীনের বিদ্বেষ আরও বাড়ে ২০১৬ সালের পর থেকে। ওই বছর তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি নির্বাচনে জয়ী হয়। চীন সন্দেহ করে, সাই আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার জন্য গোপনে চেষ্টা করছেন। তবে সাই বরাবরই বলে আসছেন, তিনি একটি স্থিতাবস্থা চান। শান্তির জন্যই তাঁর এ পদক্ষেপ।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট একটি আইনে স্বাক্ষর করেন। এর ফলে উচ্চপর্যায়ের মার্কিন কর্মকর্তারা তাইওয়ানের যেতে পারবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। আর দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এই আইন দরকার ছিল। পার্লামেন্টের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে সি বলেন, চীন ‘মাতৃভূমির শান্তিপূর্ণ একত্রীকরণে’ কাজ করবে। চীনের উন্নয়নের সুফল যাতে তাইওয়ানের সব মানুষ ভোগ করতে পারে, সে জন্য তিনি কাজ করে যাবেন। এরপর সির হুঁশিয়ারি ছিল, ‘চীনকে ভাঙার যেকোনো চেষ্টা ব্যর্থ হবে। এসব প্রচেষ্টাকারীকে ঐতিহাসিক শাস্তি পেতে হবে।’

তিন হাজার প্রতিনিধির সামনে দেওয়া ভাষণে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশকে আলাদা করতে সব ধরনের ষড়যন্ত্র ও কর্মকাণ্ড ব্যর্থ করে দেওয়া হবে। জনগণ সব ধরনের ষড়যন্ত্রের নিন্দা জানাবে এবং ইতিহাস তাদের শাস্তি দেবে। চীনা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ দূর করতে তিনি বলেন, চীন কোনো দেশের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে না। যারা অন্যকে হুমকি দিতে অভ্যস্ত, তারা সবাইকে হুমকি হিসেবে মনে করে। তথ্যসূত্র: এএফপি ও টেলিগ্রাফ।