বীমা: প্রাথমিকভাবে ইউএস-বাংলা পাবে পৌনে ৪২ লাখ ডলার

বীমা: প্রাথমিকভাবে ইউএস-বাংলা পাবে পৌনে ৪২ লাখ ডলার
কাঠমান্ডু দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সকে প্রাথমিকভাবে ৪১ লাখ ৭২ হাজার ডলার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশন; বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিদেশি বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করে ওই অর্থ ইউএস-বাংলাকে প্রাথমিকভাবে দেওয়া হবে শুধু উড়োজাহাজের ক্ষতি সামলে ওঠার জন্য। 

“তাদের রিলিফ দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে এই টাকা সংগ্রহ করেছি, যাতে তাড়াতাড়ি সামলে নিতে পারে। ওভারসিজ বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরাসরি এই অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ধাপে ধাপে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স আরও অর্থ পাবে।”

নিহত ও আহত যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আহসান বলেন, “যাত্রীদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ জানতে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমাদের তদন্ত চলছে, যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএস-বাংলার মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম এর আগে বলেছিলেন, “আমরা বীমা কোম্পানিকে জানিয়েছি, তারা তাদের কাজ শুরু করেছে।”

ইউএস-বাংলার ওই ফ্লাইটের ৭১ আরোহীর মধ্যে দুর্ঘটনায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি।

আহত ৯ বাংলাদেশির মধ্যে চারজন এখন ভারত ও সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন; বাকিরা সবাই বাংলাদেশে।

 আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যাত্রীদের বীমার দায়িত্ব বিমান পরিবহন সংস্থাকে নিতে হয়। এভিয়েশন বীমার আওতায় ইউএস-বাংলার যাত্রীসহ সম্পদের ঝুঁকি নিয়েছে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স।
আর সেনা কল্যাণ পুনঃবীমা করেছে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনে। আন্তর্জাতিক এভিয়েশন বীমা করা হয়েছে ‘কে এম দাস্তুর’ নামের একটি ব্রিটিশ বীমা কোম্পানির কাছে। ফলে ক্ষতিপূরণের টাকা এই তিন প্রতিষ্ঠানকে ভাগাভাগি করে দিতে হবে।

বিমান দুর্ঘটনার পরপরই ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ বীমার দাবি জানিয়ে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সকে চিঠি দেয়। ওই চিঠি পাওয়ার পর তিন বীমা কোম্পানি তাদের সার্ভেয়ারদের কাঠমান্ডু পাঠায়। ক্ষতি নিরূপণ করে বীমার দাবি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও (আইডিআরএ) তিন বীমা কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকে করে।

সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিক শামিম সে সময় বলেছিলেন, ইউএস-বাংলার ওই উড়োজাহাজের জন্য যে বীমা করা হয়েছে, তাতে মোট দায় হতে পারে সর্বোচ্চ ১০ কোটি ডলার। এর মধ্যে উড়োজাহাজের জন্য ক্ষতিপূরণ হতে পারে ৭০ লাখ ডলার। আর যাত্রীরা টিকিট কাটলেই বীমার আওতায় চলে আসে।

সাধারণ বীমার এমডি শাহরিয়ার আহসান এর আগে বলেছিলেন, বিধ্বস্ত ওই উড়োজাহাজের নিহত যাত্রীদের প্রত্যেকের জন্য দুই লাখ ডলার পর্যন্ত আদায়ের চেষ্টা করবেন তারা।

তবে ইউএস-বাংলার কর্মকর্তা কামরুল বলেছিলেন, নিহতরা সবাই সমান পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পাবেন না। তাদের পরিবারের সদস্যসংখ্যা, বয়স, সামাজিক অবস্থাসহ বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হবে।

নেপাল কর্তৃপক্ষের যদি গাফিলতি থাকে সেক্ষেত্রে সেখান থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে কি না- জানতে চাইলে কামরুল বলেছিলন, “বাংলাদেশ, নেপাল ও আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন এবং উড়োজাহাজের নির্মাতা কোম্পানি বোমবারডিয়ার কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিকভাবে একটি তদন্ত পরিচালনা করছে। নেপাল থেকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।”