‘সুন্দরবন রক্ষায় সরকারের অবহেলা খুবই দুঃখজনক’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, সুন্দরবন রক্ষায় জনগনের দাবী ও ইউনেস্কোর সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের অবহেলা খুবই দুঃখজনক। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, পরিবেশ ও বন বিনাশী কার্যক্রম বন্ধ না হলে অতি দ্রুতই সুন্দরবন বড় বিপর্যয়ের দারপান্তে চলে যাবে।
‘সুন্দরবন সংরক্ষণে জনগনের দাবী ও ইউনেস্কোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের অবহেলার প্রতিবাদে’ এক নাগরিক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, কয়লা ভিত্তিক রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত। সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এটা কেবল বাংলাদেশের নয়, বিশ্ববাসীর সম্পদ। এই বনকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। তাই এর ক্ষতি করার কোন অধিকারই আমাদের নেই। এই বনকে ঘিরে যে সব সর্বনাশী প্রকল্প ও কার্যক্রম চলছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সুন্দরবনকে ভালবাসতেন, সুন্দরবনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন। ১৯৭২ সালের তার একটি বক্তব্যে এর প্রমান পাওয়া যায়। পরিবেশ, মানবিকতা ও ভবিষ্যত প্রজম্মের স্বার্থে সুন্দরবন বিনাশী সকল কার্যক্রম ও পদক্ষেপ বাতিল করে একে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান তিনি।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)সহ ৫৭টি সদস্য সংগঠনের উদ্যোগে শনিবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের যুক্তিকতা তুলে ধরে বলেন দেশের ও বিদেশের সকল আধুনিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সকল বিজ্ঞানী ও ইউনেস্কো পরিস্কার গবেষণা তথ্যসহ বলেছে যে রামপাল প্রকল্প সুন্দরবন বিধ্বংসী হবে।
তিনি বলেন, ভারত তাদের দেশ থেকে কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প থেকে সরে আসার বিভিন্ন উদ্যোগ ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও বাংলাদেশে এমন একটি পরিবেশ বিধবংসী কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা তাদের দ্বিমুখী নীতিরই বহি:প্রকাশ।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মোঃ আব্দুল মতিন জনগনের দাবী ও ইউনেস্কোর সিদ্ধান্তসমূহের প্রতি সম্মান দেখিয়ে রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবনের পাশ থেকে সকল শিল্প-কারখানা সরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। পরিবেশ ও জনস্বার্থে রামপাল প্রকল্প বিষয়ে অনমনীয়তা থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বাপা’র যুগ্মসম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে যে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প অর্থনৈতিক, পরিবেশ-প্রকৃতি, মানবাধিকার সবকিছুর জন্যই হুমকী।
এতে বাপা’র যুগ্মসম্পাদক আলমগীর কবির, গ্রীন ভয়েস’র সহসমন্বয়ক হুমায়ন কবির সুমন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, ঢাকা ইয়ুথ ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ মহাজন, সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ, পুরান ঢাকার সংগঠক রাফি চৌধুরী প্রমুখ। সমাবেশে আয়োজক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিগণ ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিগন অংশ গ্রহন করেন।