দুজনকে তুলে নিয়ে ফেলে গেল একজনকে
রাজশাহীর চারঘাটে একটি কালো মাইক্রোবাস এসে দুই কলেজশিক্ষককে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার অনুপমপুর এলাকা থেকে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। এর মধ্যে একজন শিক্ষক সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে এলেও, আরেকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, তাঁরা ঘটনাটি সম্পর্কে জানেন না।
এই শিক্ষকেরা হচ্ছেন, চারঘাটের ডাকরা ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক বজলুর রহমান ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক শফিকুর রহমান ওরফে উজ্জ্বল। বজলুর রহমানের বাড়ি চারঘাটের রায়পুর গ্রামে। তিনি চারঘাট উপজেলা সদরে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। শফিকুর রহমানের বাড়ি উপজেলার আস্করপুর গ্রামে।
এর মধ্যে বজলুর রহমানকে পাবনার দাশুরিয়া এলাকার পরে একটি জলাশয়ের ভেতরে নামিয়ে চলে যেতে বলে অপহরণকারীরা। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাড়ি ফিরে এসেছেন তিনি। বজলুর জানান, যাঁরা তুলে নিয়েছিল তাঁদের তিনি চেনেন না। পকেটে ২০০ টাকা গুঁজে দিয়ে তাঁকে চলে যেতে বলা হয়। এ সময় তাঁকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। উজ্জ্বলের খবর তিনি জানেন না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা পৌনে ১১টার দিকে শফিকুর রহমানের মোটরসাইকেলের পেছনে চেপে বজলুর রহমান বাসায় ফিরছিলেন। তাঁরা যখন অনুপমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে এসে পৌঁছান, তখন পেছন দিক থেকে একটি মোটরসাইকেল এসে তাঁদের পথরোধ করে। সঙ্গে সঙ্গে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস এসে তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। এরপর গাড়ির ভেতর থেকে কয়েকজন লোক বের হয়ে শফিকুর ও বজলুর রহমানকে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপরই গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। গাড়ি থেকে নামা একজন লোক শফিকুরের মোটরসাইকেলটি চালিয়ে গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে চারঘাট উপজেলা সদরের দিকে চলে যায়।
চারঘাটের ডাকরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুই শিক্ষক ক্লাস শেষে করে বাসার উদ্দেশে কলেজ থেকে বের হয়ে যান। পরে লোকমুখে তাঁদের তুলে নেওয়ার খবর শুনেছেন তিনি।
শিক্ষক বজলুর রহমানের ছোট ভাইয়ের শ্বশুর আলমগীর হোসেনের বাড়ি চারঘাট উপজেলা সদরে। তিনি বলেন, লোকমুখে খবর শোনার পরপরই তাঁরা থানায় গিয়েছেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ কিছু বলতে পারেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক শফিকুর রহমানের পরিবারের লোকজনও এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁরাও লোকমুখে ঘটনা শুনেছেন।
চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ওই দুই শিক্ষককে তুলে আনেনি। লোকমুখে ঘটনা শোনার পর থেকেই খোঁজাখুঁজি চলছে।
রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা আব্দুস সালাম বলেন, চারঘাট থানার ওসি ঘটনাটি জানিয়েছেন। তারপর থেকে খোঁজাখুঁজি চলছে। তিনি বলেন, ‘ওই দিকে তো টাকা-পয়সা লেনদেনের ঘটনা নিয়ে অপহরণ নাটক সাজানো হয়। এটাও সেই রকম ঘটনা কিনা কে জানে।’
রাজশাহী র্যাব ৫-এর উপ-অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব ওই দিকে কোনো অভিযান চালায়নি। ঘটনাটি শোনার পর থেকে তাঁরাও খোঁজ করছেন।