‘কী, খুলনায় যাবেন নাকি?’ এই মেঘেদের রাজ্যে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ হাজার মিটার উচ্চতায় খুলনা এল কোত্থেকে? সিটের সামনে থাকা মনিটরের মানচিত্রটা দেখিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, ‘এই দেখেন আমাদের বিমানটা এখন খুলনা অতিক্রম করছে!’
ক্ষণিকের জন্য গৃহকাতর হয়ে পড়েন মিরাজ। কিন্তু গৃহকাতরতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ কোথায়—সামনে এসে পড়েছে নতুন চ্যালেঞ্জ। পরশু কলম্বোয় শুরু নিদাহাস ট্রফি। ‘গত বছর শ্রীলঙ্কায় আমার ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি অভিষেক। আমার দুই অভিষেকেই জিতেছিল বাংলাদেশ’—বিমানের জানালা দিয়ে আসা আলোকরশ্মিতে মিরাজের মুখ যতটা না দ্যুতিময় হয়ে ওঠে, তার চেয়ে বেশি দ্যুতি ছড়ায় মুখের মিষ্টি হাসিটা।
মিরাজকে একটি কঠিন প্রশ্ন করা হলো, এই সিরিজে সবচেয়ে শক্তিশালী কোন দল? ভারত নাকি চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া শ্রীলঙ্কা? বিমানের জানালা থেকে চোখটা ঘুরিয়ে বিস্মিত চোখে তাকালেন, যেন বড় ভুল প্রশ্ন করা হয়েছে! ‘আমরা, এই সিরিজে বাংলাদেশ সবচেয়ে শক্তিশালী দল!’—বিস্ময়ে যখন চোখের পলক ফেলার উপায় নেই, নেত্রযুগল কপালেই উঠিয়ে দিল মিরাজের পরের কথাটা, ‘দোয়া করবেন, আমরা যেন ১৯ তারিখে ফ্লাইটে (নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের পরদিন) ফিরতে পারি!’
দলের তরুণ সদস্যের কী আত্মবিশ্বাস, কী ইতিবাচক মানসিকতা! শুধু মিরাজ নন, এই ভাবনা যে গোটা দলেরই, সেটি বোঝা গেল মাহমুদউল্লাহর কথাতেও। রওনা দেওয়ার আগে শাহজালাল বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বলেছেন, ‘লক্ষ্য অবশ্যই টুর্নামেন্ট জেতা, পাশাপাশি আমাদেরও অনেক কিছু করার বাকি আছে। অনেক কিছু প্রমাণ করার বাকি আছে। আমরা কতটুকু ভালো করতে পারি এ সংস্করণে, সেটা প্রমাণ করতে হবে। প্রত্যেকে ব্যক্তিগত সেরাটা যদি আমরা দিতে পারি, আমার মনে হয় ভালো কিছু অর্জন সম্ভব।’
মেঘেদের রাজ্য পেরিয়ে বাংলাদেশ দল কলম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাল বিকেল চারটায়। এবার আর তাজসমুদ্রে নয়, মাহমুদউল্লাহরা উঠেছেন হোটেল মুভেনপিকে। নতুন ঠিকানার মতো লঙ্কা অভিযান এবার নাহয় নতুনভাবেই শুরু করুক বাংলাদেশ।