হাজার হাজার বছরের রহস্য জমে রয়েছে এই গুহার গভীরে
ফিংগাল’স কেভ। ছবি: শাটারস্টক
এ দ্বীপের ভুতুড়ে চেহারা তাদের মতো সাহসীদেরও ভয় দেখিয়েছে। তাই বোধ হয় এমন একটা লোভনীয় গুহা পেয়েও সেখানে আড্ডা গাড়েনি উত্তর ইউরোপের জলদস্যুরা।
সেই দ্বীপে কেউ বাস করে না। উত্তাল সমুদ্রের নীল জলে দাঁড়িয়ে থাকে মূর্তিমান বিস্ময়। নাবিকেরা তাকে দেখেছে হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে। এক সময়ে ‘সমুদ্র নেকড়ে’ ভাইকিংরা এই দ্বীপের নাম রেখেছিল ‘ফিংগাল’স কেভ’। এ দ্বীপের ভুতুড়ে চেহারা তাদের মতো সাহসীদেরও ভয় দেখিয়েছে। তাই বোধ হয় এমন একটা লোভনীয় গুহা পেয়েও সেখানে আড্ডা গাড়েনি উত্তর ইউরোপের জলদস্যুরা। লুকিয়ে রাখেনি কোনও গুপ্তধন।
গুহার অভ্যন্তর, ছবি: শাটারস্টক
স্কটল্যান্ডের আওতায় উত্তর সাগরের এই দ্বীপটি স্টাফা নামের এক দ্বীপভূমিরই একটি দ্বীপ ‘ফিংগাল’স কেভ’। স্টাফা ও তার আশপাশের দ্বীপের বৈশিষ্ট্য এক আশ্চর্য আবহবিকার। ‘ফিংগাল’স কেভ’-এর ভিতরে প্রকৃতির আশ্চর্য খেয়ালে তৈরি হয়েছে অগণিত খিলান। ভূতত্ত্ববিদরা জানান, আজ থেকে প্রায় ৬০ মিলিয়ন বছর আগে লাভাস্রোত এই গুহাকে তৈরি করেছিল। গলিত পাথর খড়িমাটির উপর দিয়ে যাওয়ার সময়েই এই বিশেষ আকৃতি প্রাপ্ত হয়।
আয়ারল্যান্ডের জায়ান্ট’স কজওয়ে, ছবি: শাটারস্টক
আয়ারল্যান্ডের ‘জায়ান্ট’স কজওয়ে’ নামের এলাকাটিও একই রকমের। এই দুইয়ের মধ্যে সাদৃশ্য নাকি আপতিক নয়। ভূতত্ত্ববিদবিদদের মতে, এই দুই প্রাকৃতিক বিস্ময়ের মধ্যে যোগসূত্র বিদ্যমান। একই লাভাস্রোত থেকে এই দুই বিস্ময়ের জন্ম হয়। শুধু তাই নয়, এই দুই বিস্ময় নাকি একদা পরস্পরের সঙ্গে একটি সেতু দ্বারা সংযুক্ত ছিল, পরে তা বিনষ্ট হয়ে যায়।
ফিংগাল’স কেভ দ্বীপ, ছবি: শাটারস্টক
প্রাচীন আইরিশ ও কেল্টিকরা এই ব্যাখ্যা জানত না। তারা বিশ্বাস করত, এই সেতু কোনও দানবের তৈরি। ‘ফিংগাল’স কেভ’-কেও তারা দানবের আস্তানা বলে চিহ্নিত করত। ১৯ শতকের জার্মান ধ্রুপদী সঙ্গীত রচয়িতা ফেলিক্স মেন্ডেলসন তাঁর বিখ্যাত কম্পোজিন ‘হেব্রিড’স ওভারচার’ রচনা করেন এই গুহার ভিতরে ঘুরপাক-রত বাতাসের শব্দকে কল্পনা করে। ব্রিটিশ রোম্যন্টিক চিত্রকর টার্নার এই গুহাকে নিয়ে তৈলচিত্র এঁকেছেন। পরে এই গুহা ব্রিটিশ রক গ্রুপ ‘পিঙ্ক ফ্লয়েড’-এরও প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল।