ডেডপুল-২ সিনেমার যত অজানা

ডেডপুল-২ সিনেমার যত অজানা
২০১৬ সালে সিনেমা হলে নিজ দৌরাত্ম্য দিয়ে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাগিয়ে নেয়া আমেরিকান সুপার হিরো চলচ্চিত্র ডেডপুলের এমন অভাবনীয় সাফল্য হয়তো খুব কম মানুষই অনুমান করতে পেরেছিল। আর এই সাফল্যের রেশ ধরে রাখতে, প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফক্স নিয়ে এল ডেডপুল-২, যা রিলিজ পাবে এই ১৮ মে। স¤প্রতি বের হয়েছে ডেডপুল-২ এর আন্তর্জাতিক ট্রেইলার, কিন্তু এই ট্রেইলার দেখেও খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না মার্ভেল কমিকের ডেডপুল চরিত্রের ওপর নির্মিত এই সিনেমায় কী কী থাকছে। ডেডপুল-২ এর প্রায় পুরোটাই এখনো দর্শকদের কাছে অজানা। আজ আমরা আপনাদের জানাতে এসেছি পরবর্তী এই ডেডপুল সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কী কী জানা গেছে!

১ যদিও বিশ্বব্রহ্মান্ড আরো বড় হবে, এটা তবুও একটি ডেডপুল গল্প
সাধারণত অধিকাংশ কমিক বই নির্ভর মুভিগুলোতে দেখা যায়, গল্পে অন্যান্য চরিত্র এত বেশি থাকে যে, বেচারা নায়ককেই তখন মনে হয় সাপোর্টিং রোল। কিন্তু ডেডপুল-২ তে তা হয়নি। ডমিনো চরিত্রের সংযোজন, কলোসাস ও নেগাসনিক টিনএজ ওয়ারহেড এর প্রত্যাবর্তন এবং এক্স-ফোর্স গঠনের মাধ্যমে ডেডপুল-২ এ কাস্টিং আরেকটু স¤প্রসারিত হলেও লেখক রেট রিজ একটি বিষয়ে ঠিকই অনড় থেকেছেন যাতে এই সিনেমাটা যেন ‘ডেডপুলের সিনেমা’ই হয়। এটি একক সিনেমাই হবে। এতে অনেক চরিত্রের সন্নিবেশ ঘটলেও এর পরবর্তী সিনেমাটি ডেডপুলের সিনেমাই হবে, ডেডলাইন মিডিয়াকে জানান রিজ।

২ বড় পর্দায় প্রথমবারের মতো ক্যাবলের আবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে
সেই ২০০০ সালে যখন প্রথম এক্সম্যান মুভিটি মুক্তি পায়, প্রায় তখন থেকেই ভক্তরা অপেক্ষা করেছিলেন ক্যাবলকে সিনেমায় দেখার জন্য। কিন্তু এতদিন এই রুপালি চুলের টাইমট্রাভেলার প্রায় ভুলে যাওয়া এক চরিত্র হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ডেডপুল-২ এ এই চরিত্রকে ভক্তদের সামনে নিয়ে আসছেন জশ ব্রলিন যাকে এই বছর থানস ইন অ্যাভেঞ্জারস : ইনফিনিটি ওয়্যার নামক আরো একটি সুপারহিরো সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে দেখা যাবে! কমিকে ডেডপুল এবং ক্যাবলকে যেমনটা দেখা যায়, সেই মেজাজ পাওয়া যাবে এই সিক্যুয়েলেও। চরিত্রগুলো একে অপরের সঙ্গে এমনভাবে সম্পর্কিত যে, তাকে মূল গল্পেই রাখার কথা ভাবা হচ্ছে।
রিজ ডেডলাইনকে বলেন, এটা নিয়ে সব সময়ই একটা বিতর্ক ছিল যে, প্রথম সিনেমাতেই ক্যাবলকে আনা যায় কিনা। মনে হলো আগে ডেডপুলের একটা দুনিয়া তৈরি করা উচিত তারপর চরিত্রগুলো পরবর্তী পর্বে নিয়ে আসা উচিত। ক্যাবল মূলত এক্সম্যানের সদস্য সাইক্লপ্স এবং জেন গ্রের ক্লোন ম্যাডেলাইন প্রায়োরের ছেলে। খটকা লাগছে? বিশ্বাস করুন এটাই ক্যাবল সম্পর্কিত সবচেয়ে কম দ্বিধান্বিত তথ্য! যদিও ডেডপুল-২ এত ইতিহাস হয়তো দেখাবে না কিন্তু এই গল্পে ক্যাবল যে একটি বড় ভ‚মিকা পালন করবে তা তো আশা করাই যায়!

৩ নতুন পরিচালক
যদিও ডেডপুল ৭৫০ মার্কিন ডলার আয় করেছে সারা দুনিয়ায় ব্যবসা করে এবং বড় রকমের সফলতা অর্জন করেছে, তারপরও এর মূল পরিচালক টিম মিলারকে এই সিক্যুয়ালের জন্য ধরে রাখা যায়নি। স¤প্রতি মিলার জানান, তিনি এই সিক্যুয়াল পরিচালনা থেকে সরে এসেছেন এই ভেবে যে, এই সিক্যুয়ালটি অতিরিক্ত ব্যয়বহুল এবং আড়ম্বরপূর্ণ হয়ে যাবে। তাই তার পরিবর্তে এই সিক্যুয়ালের হাল ধরবেন জন উইকের (২০১৪) পরিচালক ডেভিড লিচ। পরিচালক বদলের পরও এই সিক্যুয়ালে থাকবেন রায়ান রেনল্ডস এবং এর লেখক রেট রিজ ও পল ওয়েরনিক। তিনি এমন একজন মানুষ যিনি তার কাজের প্রতি সচেতন, লিচের নিয়োগ সম্পর্কে রেনল্ডস এন্টারটেইনমেন্ট উইকলিকে জানান এ কথা। তার মতে, ডেভিড যা যা করতে পারেন তার মধ্যে একটি হলো তিনি একটি অতি সীমিত বাজেটের মধ্যেও এমন এক সিনেমা বানিয়ে ফেলতে পারেন যা দেখে মনে হবে তা তৈরি করতে আরো ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশি খরচ হয়েছে, আর এই কাজ খুব কম পরিচালকই করতে পারেন।
৪ ওয়ার্কিং টাইটেল ‘লাভ মেশিন’
না, এই শিরোনামটি সিনেমা হলের ব্যানারে আপনি খুঁজে পাবেন না। তবে যখন এটি নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন এই সিনেমার নাম ছিল ‘লাভ মেশিন’।

৫ এই সিনেমা তার অরিজিনাল থেকেও বড় কিছু হবে এমনটা আশা করবেন না!
যে কোনো স্টুডিওই যখন কোনো হিট মুভির সিক্যুয়াল বানাতে যায়, স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে একটি প্রবৃত্তি থাকে যে সিক্যুয়ালকে অরিজিনাল মুভির থেকেও বড় এবং হিট করতে হবে। যার ফলে আরো স্পেশাল ইফেক্ট, আরো বেশি একশন এবং আরো বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ করা হয়।
ছবিটি ব্যয়বহুল হয়ে পড়বেÑ মিলারের এমন ভয় থাকা সত্তে¡ও ডেডপুল-২ এর নির্দেশনা এমন কোনো দিকে আগাচ্ছে না আপাতত। প্রযোজক সিমন কিনবার্গের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানান, তারা চেষ্টা করেছেন মূল চলচ্চিত্রের অনন্য টোন এবং ফিলটা ধরে রাখার।
‘দ্বিতীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় প্রতিজ্ঞা হলো একে আরো বড় কিছু না বানানো’ কিনবার্গ জানান এন্টারটেইনমেন্ট উইকলিকে। একে আরো বড় মাপের কিছু বানানোর প্রলোভনকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে, যা সাধারণত কোনো সারপ্রাইজ হিট মুভি তৈরির ক্ষেত্রে করা হয় না।