ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলার আত্মসমর্পণ

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলার আত্মসমর্পণ
আত্মসমর্পণের সময় লুলাকে ঘিরে ধরেন সমর্থকেরা। ছবি: রয়টার্স
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে লুলার ১২ বছরের সাজাভোগ শুরু হলো।

দুর্নীতির দায়ে গত বৃহস্পতিবার ১২ বছরের সাজাভোগ শুরু করতে লুলাকে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিকেল পাঁচটার মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে আদেশ পালন না করে তিনি সমর্থকদের নিয়ে নিজ শহর সাও পাওলোতে স্টিল শ্রমিক ইউনিয়নের ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

দুই দিন সেখানে অবস্থানের পর লুলা গতকাল শনিবার আত্মসমর্পণ করেন। দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে লুলা নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। 

আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, আদালতের নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর ৭২ বছর বয়সী লুলা ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের সময় বিপুলসংখ্যক সমর্থক লুলার গাড়ি ঘিরে ছিল।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের শহর কুরিতিবাতে কারাভোগের জন্য লুলাকে পুলিশ হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যায়। হেলিকপ্টারটি অবতরণের পর লুলাবিরোধীরা আতশবাজি পুড়িয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। ওই সময় দাঙ্গা পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দেশটির অগ্নিবিষয়ক বিভাগ জানিয়েছে, এ ঘটনায় আটজন সামান্য আহত হয়েছে। 

দেশটিতে অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে লুলা এগিয়ে ছিলেন। তবে তাঁর কারাবরণের মধ্য দিয়ে এখন এই দৌড়ে অন্য প্রার্থীদের পথ প্রশস্ত হয়েছে।

ধাতুশ্রমিক ও শ্রমিকনেতা থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া লুলার এক অন্য রকম ভাবমূর্তি রয়েছে লাতিন আমেরিকার বাম রাজনীতিতে। প্রায় অর্ধশতাব্দীর মধ্যে ব্রাজিলে তিনিই ছিলেন প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট।

লুলা দেশটিতে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ ওঠে, সরকারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ হিসেবে ব্রাজিলের একটি বড় নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট নিয়েছিলেন লুলা। এ ঘটনায় গত বছর তাঁকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে তিনি দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আপিল খারিজ করে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন।