ভারতের পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমান সংগ্রহের চেষ্টা ভণ্ডুল

উপমহাদেশ
ভারতের পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমান সংগ্রহের চেষ্টা ভণ্ডুল
‘ফিফথ জেনারেশন ফাইটার এয়ারক্রাফট’ (এফজিএফএ) নামে পরিচিত অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমান তৈরির ভারত ও রাশিয়ার প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানতে পেরেছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে ‘ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন মিটিং’য়ে রুশ মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে ভারতের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।

সভায় উপস্থিত দোভাল ও প্রতিরক্ষাসচিব সঞ্জয় মিশ্র এককভাবে পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমান তৈরির জন্য রাশিয়ার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা বলেন, ভারত পরের দিকে প্রকল্পটির সাথে যুক্ত হতে পারে কিংবা পুরোপুরি তৈরি ওই বিমান কিনে নিতে পারে।

নয়া দিল্লি ও মস্কো ২০০৭ সালে এফজিএফএ নিয়ে আলোচনা করেছিল। ওইসময় তারা একমত হয় হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স (এইচএএল) ও রাশিয়ার সুখোই ডিজাইন ব্যুরো ওই জঙ্গিবিমান তৈরি করবে। ২০১০ সালে সুখোই ‘পারসপেকটিভনি অ্যাভিয়াতসিনি কোমপ্লেকস ফ্রন্টোভয় অ্যাভিয়াতসি’ নামে বিমানটি আকাশে উড়ায়। এটি পাক-ফা নামেও পরিচিত। বর্তমানে ফ্লাইট টেস্টিং পর্যায়ে সাতটি প্রটোটাইপ সক্রিয় রয়েছে।

রাশিয়া বলছে, পাক-ফা তার প্রয়োজন পূরণ করবে। কিন্তু ভারতীয় বিমানবাহিনী বলছে, তাদের আরো ভালো জঙ্গিবিমানের প্রয়োজন। এ কারণে এইচএএল ও সুখোই ৮.৬৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে পাক-ফার উন্নত সংস্করণ তৈরি করার। ভারতীয় বিমানবাহিনী ওই বিমানের ৫০টি স্থানে উন্নত করার দাবি জানায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি রাডার ও আরো শক্তিশালী ইঞ্জিন।

মূলত ভারতীয় বিমানবাহিনীই ওই বিমানের ব্যাপারে এখন আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তারা মনে করছে, এগুলো যথাযথ মানের পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমান হবে না।

অ্যারোস্পেস বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, গোপনে উড্ডয়নের ক্ষেত্রে পাক-ফার চেয়ে মার্কিন বিমানবাহিনীর এফ-২২ র‌্যাপটর অনেক বেশি কার্যকর হবে। তবে এতে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি, এর লাইফ-সাইকেল ব্যায়ও অনেক। এ বিমানে রাডার ফাঁকি দেওয়ার কৌশলের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ কিছুটা উন্নত সেন্সর-সংবলিত যুদ্ধে দক্ষ বিমানের দিকে নজর দিতে বলেছেন।

এফজিএফএ প্রকল্প বাতিল করাটি ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য বড় ধরনের ঘটনা হতে পারে। কারণ একসময় একেই বিবেচনা করা হতো উচ্চ-প্রযুক্তির ভবিষ্যতের যুদ্ধবিমান। ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের (ইউপিএ) প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি মার্কিন পঞ্চম প্রজন্মের বিমান এফ-৩৫ লাইটিং টু কেনার প্রস্তাব বাতিল করে বলেছিলেন, এর চেয়ে এফজিএফএ অনেক ভালো। এটিই ভারতের পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমানের প্রয়োজন পূরণ করতে পারবে।

এখন এফজিএফএ বাতিল হয়ে যাওয়ায় ভারত সম্ভবত এফ-৩৫ লাইটিং টু কিনবে। একসময় ভারতীয় সামরিক বাহিনী তাদের জঙ্গিবিমান, হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমানের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখন তারা আমেরিকা থেকে কেনাকাটা বাড়াচ্ছে।

দৃঢ় হচ্ছে পাকিস্তান-চীন সম্পর্ক, সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়াচ্ছে ভারত

চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেঙ্গি বলেছেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক দৃঢ় করার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা আরো গভীর ও প্রায়োগিক করতে এগিয়ে যাচ্ছে।

পাকিস্তানের নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল জাফর মাহমুদ আব্বাসীর সাথে সম্প্রতি এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

ওয়েই ফেঙ্গি বলেন, চীন পাকিস্তান ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু ও ভালো অংশীদার। ওয়ান বেল্ট, ওয়ার রোড প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত চীন। সবাই এখন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের নেতৃত্বে চীনা স্বপ্ন বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

চীনা সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করায় অ্যাডমিরাল আব্বাসী ওয়েই ফেঙ্গিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান চীনের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক লালন করে যাচ্ছে। দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বিনিময়ে তারা আগ্রহী।

এদিকে পাকিস্তান সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে সেনা তৎপরতা বাড়িয়েছে ভারত। এমনকি বিশেষভাবে তৈরি থাকতে বলছে বিমানবাহিনীকে।

জানা গেছে, ৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়েই জারি হয়েছে সতর্কতা। কেন্দ্র বলছে, এটি হল আগাম সতর্কতা। কারণ পাহাড়ে বরফ গলতেই ভারতে জঙ্গি ঢোকাতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। পিছন থেকে সাহায্য করছে পাক সেনাও। সীমান্তে ভারতীয় চৌকি নিশানা করে মর্টার হামলা চালানো হচ্ছে।

পাল্টা জবাব দিতেই নিয়ন্ত্রণরেখা ও সীমান্ত জুড়ে বাড়ানো হয়েছে সেনার সংখ্যা ও অস্ত্রসম্ভার। কোটলি, মিরপুর, এমনকি রাওয়ালপিন্ডি থেকেও পূর্ব প্রান্তে সেনা পাঠানো শুরু করেছে ইসলামাবাদ।