বল টেম্পারিং : মুখ খুলতে বাধ্য হলেন পন্টিং
কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন দেশটির সাবেক সফল অধিনায়ক রিকি পন্টিং। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) একাদশ আসরে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কোচের দায়িত্ব পালন করবেন পন্টিং। আসন্ন আইপিএল বিষয়ে দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে দল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বল টেম্পারিংয়ের ব্যাপারে মুখ খুলতে হয় তাকে। বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া দলের এমন কাণ্ডে আমি মর্মাহত। অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে আমরা সঠিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পছন্দ করি। কিন্তু এখানে সেটি হয়নি।’
কেউটাউনের বল টেম্পারিং নিয়ে গেল এক সপ্তাহ আলোচনা তুঙ্গে। সেই আলোচনায় যোগ দেননি পন্টিং। সাবেক সতীর্থদের নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন তিনি, ‘আমি এই প্রথম বল টেম্পারিং নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। একজন সাবেক খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে এমন ঘটনায় বলব- যা ঘটেছে, তাতে আমি বিস্মিত। তবে এখন ভাল দিক হচ্ছে- এই সকল সমস্যা শেষ হয়ে আসছে। নিষিদ্ধ হওয়া খেলোয়াড়রা তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে এবং কোনো প্রকার আপিলে যায়নি।’
দলের সিনিয়রদের পরামর্শে কেপটাউনে বল টেম্পারিং করেন অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ওপেনার ক্যামেরন ব্যানক্রফট। পরের সবকিছু স্বীকার করে নেন অসি সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এরপর তদন্তের মাধ্যমে বল টেম্পারিং-এর দায়ে স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারকে এক বছরের জন্য ও ব্যানক্রফটকে নয় মাসের নিষিদ্ধ করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের এমন কু-কীর্তি আশা করেনি দেশটির জনগণ বলে জানান পন্টিং, ‘সমর্থকরা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ভালো ক্রিকেট খেলা ও কঠিন প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা আশা করে। বল টেম্পারিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যে প্রতিক্রিয়া হয়েছে এটা অনেক বড়। কারণ অস্ট্রেলিয়ানরা মনে করে- খেলোয়াড়েরা সঠিক পন্থায় খেলাটা খেলেনি।’
তবে নিষিদ্ধ হওয়া খেলোয়াড়দের নিয়ে যেভাবে আলোচনা হচ্ছে, সেটি মাত্রাতিরিক্ত বলে মনে করেন পন্টিং। তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতির বিতর্কটি আমার কাছে বেশ মজা লাগে। কয়েক মাস আগে পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে অ্যাশেজে ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তখন কিন্তু দলের সংস্কৃতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠেনি। আমি বিশ্বাস করি, এখন যে সংস্কৃতির সমস্যা নিয়ে কথা হচ্ছে, এটি আসলে মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।’
আপিল করবেন না ওয়ার্নারও
বল টেম্পারিং কাণ্ডে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করার শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার।বুধবার নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন স্মিথ ও ব্যানক্রফট। আপিল করবেন না তারা। এসময় নিজের মত জানাননি ওয়ার্নার। একদিন পর জানালেন, তিনিও আপিল করবেন না। শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তিনি লিখেন, 'আমি আজ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে জানাতে চাই, আমার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা আমি মেনে নিচ্ছি।'
তিনি আরো লিখেন, 'আমি এই ঘটনার জন্য আসলেই দুঃখিত। এবং এখন থেকে একজন ভালো মানুষ, সহকর্মী এবং আদর্শবান হতে সবকিছু করব।'
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিনে বল টেম্পারিং কাণ্ডে অভিযুক্ত হন সাবেক অধিনায়ক স্মিথ, সহ অধিনায়ক ওয়ার্নার ও উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ব্যানক্রফট। এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন স্মিথ ও ওয়ার্নার। নয় মাসের জন্য ব্যানক্রফট। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল না করায় আগামী বছর এপ্রিলে মাঠে নামবেন স্মিথ ও ওয়ার্নার এবং ব্যানক্রফট চলতি বছরের ডিসেম্বরে।
নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করবেন না স্মিথ-ব্যানক্রফট
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগে নিষিদ্ধ হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার তিন ক্রিকেটার স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট। এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন স্মিথ ও ওয়ার্নার এবং নয় মাসের জন্য ব্যানক্রফট। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কোনো আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্মিথ ও ব্যানক্রফট।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে স্মিথ বলেছেন, 'আমি আবারো দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যা কিছু দরকার করব। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, অধিনায়ক হওয়ায় এই ঘটনার পুরো দায় আমি নিয়েছি। আমি এই শাস্তি চ্যালেঞ্জ করব না। এই শাস্তির মধ্য দিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একটি কঠিন বার্তা পাঠিয়েছে এবং আমি সেটা গ্রহণ করেছি।'
আপিল না করায় বিশ্বকাপের মাত্র দুই মাস আগে আগামী বছরের এপ্রিলে মাঠে ফিরবেন স্মিথ।
স্মিথের এই বার্তার পরই টুইট করেছেন ব্যানক্রফট। তিনিও সাবেক অধিনায়কের সুরেই বলেছেন, শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছেন। নয় মাসের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করবেন না তিনি। লিখেছেন, 'দেশের জনগণের আস্থা ফিরে পেতে, যা করার প্রয়োজন আমি করব।' এই দুঃসময়ে যারা তাকে সমবেদনা জানিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্যানক্রফট।