‘শুরু থেকেই নাইট বোলারদের ছন্দ নষ্ট করে দিতে হবে, ওয়ার্নের মন্ত্রই হল ইতিবাচক থাকো’

‘শুরু থেকেই নাইট বোলারদের ছন্দ নষ্ট করে দিতে হবে, ওয়ার্নের মন্ত্রই হল ইতিবাচক থাকো’
রাজস্থান রয়্যালস যে আইপিএলে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েই বিপজ্জনক প্রতিপক্ষ হিসাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তার নেপথ্যে প্রধান কাণ্ডারি সঞ্জু স্যামসন।

একাদশ আইপিএল তাঁর পুনর্জন্মের টুর্নামেন্ট বলে মনে করা হচ্ছে। তিন ম্যাচে ১৭৮ রান। অরেঞ্জ ক্যাপও তাঁর দখলে। সর্বোচ্চ? বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৪৫ বলে ম্যাচ জেতানো অপরাজিত ৯২ রান। রাজস্থান রয়্যালস যে আইপিএলে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েই বিপজ্জনক প্রতিপক্ষ হিসাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তার নেপথ্যে প্রধান কাণ্ডারি সঞ্জু স্যামসন। আজ, বুধবার জয়পুরে কলকাতা নাইট রাইডার্স বোলারদের পরীক্ষা নেবেন ২৩ বছরের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। তার আগে ‘এবেলা খেলা’কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন রয়্যালস শিবিরের নায়ক।

প্রশ্ন: ফের রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে প্রত্যাবর্তন ঘটালেন। অনুভূতিটা কীরকম?
সঞ্জু স্যামসন: দুর্দান্ত অনুভূতি। আমি সৌভাগ্যবান যে, রাজস্থান রয়্যালসে ফিরতে পেরেছি। এই দলের হয়ে আইপিএলে খেলেই আমি পরিচিতি পেয়েছিলাম। বরাবরই এই দলের হয়ে খেলাটা আমার স্বপ্ন। আমি আপ্লুত যে, রাজস্থান রয়্যালস কর্তৃপক্ষ আমাকে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্য মনে করেছেন।

প্রশ্ন: একাদশ আইপিএলের শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে রয়েছেন। এবারের টুর্নামেন্টে আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কী?
স্যামসন: রাজস্থান রয়্যালস আমার কাছে একটা পরিবারের মতো। পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের যেমন লক্ষ্য থাকে সংসারের আয়-উন্নতির, আমার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সেরকম। নিজে সফল হতে চাই। আর চাই দলের সাফল্যে অবদান রাখতে।

প্রশ্ন: শেন ওয়ার্নকে মেন্টর হিসাবে পেয়েছেন। রাজস্থানকে প্রথম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে মূল ভূমিকা ছিল ওয়ার্নের। দলে ওঁর প্রভাব কীরকম?
স্যামসন: রাজস্থান রয়্যালসের জন্মলগ্ন থেকে ওয়ার্ন স্যারের প্রচুর অবদান। ওঁর নেতৃত্বেই প্রথম মরসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রাজস্থান। আমি আগে কখনও ওঁর সান্নিধ্যে আসিনি। এবার সেই সুযোগ পেয়ে রোমাঞ্চিত। সবসময় ইতিবাচক কথাবার্তা বলেন। নেতিবাচক কোনও ভাবনার জায়গাই নেই দলে। সেটা ওয়ার্ন স্যারের জন্যই। যতদিন ওঁর সঙ্গে কাটাচ্ছি, আমার মুগ্ধতা আরও বাড়ছে।ওঁর মন্ত্রই হল ইতিবাচক থাকো। সকলের সেরাটা বার করে আনার সহজাত দক্ষতা রয়েছে ওয়ার্ন স্যারের।



ভরসা: আজও নারাইনদের বিরুদ্ধে রাজস্থানের বাজি সঞ্জু। ফাইল চিত্র

প্রশ্ন: দেশের অন্যতম প্রতিশ্রুতিমান উইকেটকিপার হিসাবে আপনার উত্থান হয়েছিল। তিন বছর আগে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক। তারপর আর আপনাকে ভারতীয় দলে দেখা গেল না কেন?
স্যামসন: সকল ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার। ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম বলে আমি গর্বিত। রাজস্থান রয়্যালস ছাড়া কেরলের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটেও পারফর্ম করেছি। যে দলের হয়েই খেলার সুযোগ পাই না কেন, তার সদ্বব্যবহার করতে হবে। কেরিয়ার নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নই। জাতীয় দলে নির্বাচনটা আমার হাতে নেই। আমার এক্তিয়ারে যেটা আছে, সেটা হল পারফর্ম করে যাওয়া। সেটাতেই মনোনিবেশ করছি।

প্রশ্ন: ঋষভ পন্থ-ঈশান কিষাণদের উত্থান কি প্রত্যাবর্তনের রাস্তাটা আরও কঠিন করে তুলেছে?
স্যামসন: আমাদের মধ্যে কোনও প্রতিযোগিতা নেই। ক্রিকেট খেলতে আমি ভালবাসি আর সেটাই করছি। আমার দৃ‌ঢ় বিশ্বাস, মাঠে নেমে রান করে যেতে পারলে একদিন লক্ষ্যপূরণ হবেই। তাই এখন বাকি কিছু নিয়ে ভাবছি না। আপাতত রাজস্থানের হয়ে পারফর্ম করাটাই প্রধান।

প্রশ্ন: এবারের রাজস্থান রয়্যালস দল নিয়ে  কী বলবেন?
স্যামসন: দলের ভারসাম্য খুব ভাল। অজিঙ্ক রাহানের মতো  অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে অধিনায়ক হিসাবে পেয়েছি। বেন স্টোকসের মতো দুনিয়ার অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার রয়েছে। জশ বাটলার যে কোনও পোজিশনে ভাল ব্যাট করতে পারে। জয়দেব উনাদকাট ও ধবল কুলকার্নিদের আইপিএল পারফরম্যান্স অনবদ্য। দলে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের চমৎকার সংমিশ্রণ।

প্রশ্ন: বুধবার আপনাদের প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স। কতটা কঠিন হবে লড়াই?
স্যামসন: কেকেআর দারুণ শক্তিশালী দল। ওদের ব্যাটিং-বোলিং— দুই’ই ভাল। এই ম্যাচের জন্য মুখিয়ে রয়েছি।

প্রশ্ন: কেকেআর বোলিং সামলে রান করা কতটা চ্যালেঞ্জিং?
স্যামসন: কেকেআর বোলিংয়ে খুব বৈচিত্র। ভাল পেসার রয়েছে। স্পিন বিভাগও বেশ ভাল। সুনীল নারাইন-কুলদীপ যাদবের মতো স্পিনার রয়েছে। তবে জয়পুরে ওদের কাজটাও সহজ হবে না। শুরু থেকে ওদের বোলিংয়ের ছন্দ নষ্ট করে দিতে হবে। তাহলেই ওদের বিরুদ্ধে সফল হওয়া সম্ভব।