এশিয়া
রোহিঙ্গা সঙ্কট দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশের পাশে রাশিয়া
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ‘মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানের ঢলের কথা বাংলাদেশ তুলে ধরেছে। আমরা তাদের এই সঙ্কটের দ্রুততম সমাধান করতে আমাদের সহযোগিতা নিশ্চিত করেছি। সম্প্রতি সই হওয়া প্রত্যাবাসনচুক্তির বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।’
সোমবার মস্কোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কট দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়ার কথা জানান তিনি।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা লগ্ন থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো। প্রথম স্বী
কৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। রাশিয়া বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অর্থনৈতিকসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। রুশ সেনারা ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা থেকে মাইন ও ডুবে থাকা জাহাজ মুক্ত করেছে। বাংলাদেশ যেভাবে এটি মনে রেখেছে, তাতে রাশিয়া কৃতজ্ঞ। আমরা বিদ্যমান চুক্তিগুলোর পর্যালোচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতার খসড়া নিয়ে আলোচনা করেছি।’
বর্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে : জাতিসঙ্ঘ
আসন্ন বর্ষা মৌশুমে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো সম্ভাব্য মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারন করেছেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেজ।
নিউ ইয়র্কে গত বৃহষ্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বন্যার ঝুঁকি রয়েছে এমন এলাকায় বসবাস করছে। বর্ষা এ সব মানুষের ওপর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের অপেক্ষাকৃত উচু জায়গায় সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সাথে গঠনমূলক আলোচনা হচ্ছে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, মাঠ পর্যায়ে জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করছে।
ইউএনএইচসিআরের মতে, জুলাই ও আগস্টে বর্ষা মৌশুমে দুই ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা রোহিঙ্গাদের বন্যা ও ভূমিধ্বসের ঝুঁকিতে ফেলবে।
জাতিসঙ্ঘ সাধারন অধিবেশনের প্রস্তাব অনুযায়ী মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগের অগ্রগতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে গুতারেজ বলেন, সবাই এটা মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তবে আমি আশা করি শিগগির এর সমাধান হবে।
এদিকে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য উপযুক্ত সময়ের মধ্যে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। আসন্ন বর্ষায় রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত তহবিল নেই বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের একার পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে ডাব্লিউএইচও। সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক পুনম খেত্রাপাল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কটগুলোর অন্যতম এটি। কোনো একক সংস্থা কিংবা বাংলাদেশ সরকারের একার পক্ষে এতো বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়া সম্ভব না। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এমন এক জায়গায় রয়েছে যেটা ঘূর্ণিঝড়প্রবণ। এই এলাকা বৃষ্টি শুরুর সাথে সাথেই প্লাবিত হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় পানি এবং মশাবাহিত প্রাণঘাতী বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল।