ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা রাশিয়ার

ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা রাশিয়ার
ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে বিশ্বে। আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আরএস-১২এম তোপলভের সফল পরীক্ষা করল রাশিয়া। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় আস্ত্রাখান এলাকার কাপুস্তিন রেঞ্জ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোঁড়া হয়। এবং সেটি সফলতার সঙ্গে কাজাখস্তানে রাখা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

রুশ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে উন্নত যুদ্ধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা যাচাই করে দেখার জন্য আন্তঃমহাদেশীয় এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করা হয়েছে। এই মিসাইলের পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও অভিজ্ঞতা রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় কাজে লাগানো হবে যাতে শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করা যায়।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার কৌশলগত বাহিনী অত্যাধুনিক ইয়ার্স আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। ইয়ার্স হচ্ছে তোপল-এম ক্ষেপণাস্ত্র সিরিজের সর্বশেষ সংস্করণ এবং কঠিন জ্বালানি চালিত এই ক্ষেপণাস্ত্র একইসঙ্গে কয়েকটি ওয়ারহেড বহন করতে পারে।

২৩টি দেশের কূটনীতিকদের পাল্টা বহিষ্কার মস্কোর

পক্ষত্যাগী রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়েকে বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দেশে দেশে রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের যে হিড়িক পড়ে গেছে তার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে মস্কো। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যেসব দেশ রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার করেছিল, ক্রেমলিন এবার সেসব দেশের সমসংখ্যক কূটনীতিককে রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।

পাশাপাশি রাশিয়ার যুক্তরাজ্য দূতাবাস থেকে কর্মী সংখ্যা কমাতেও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সলসবেরির উইল্টশায়ারে পক্ষত্যাগী রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে হত্যাচেষ্টায় রাশিয়া সোভিয়েত আমলের নার্ভ এজেন্ট নোভিচক ব্যবহার করেছে অভিযোগ তুলে যুক্তরাজ্য প্রথম তাদের দেশে থাকা ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অন্য মিত্ররাও শতাধিক রুশ কূটনীতিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়। সব মিলিয়ে ২৯টি দেশের প্রায় ১৫০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়া হয়।

মস্কো শুরু থেকেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়েকে হত্যাচেষ্টায় কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। যুক্তরাজ্যের কূটনীতিক বহিষ্কারের পাল্টায় প্রথম দফায় সমান ২৩ ব্রিটিশ কূটনীতিককে দেশ ছাড়তে নির্দেশ দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেয় মস্কো।

শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সংহতি জানানো আলবেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, মেসিডোনিয়া, মলদোভা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন ও ইউক্রেনের ৫৯ কূটনীতিককে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে। 
পরে এক বিবৃতিতে তারা বলে, লন্ডনের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে সংহতি জানানো বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি, জর্জিয়া ও মন্টেনিগ্রোর বিরুদ্ধেও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রাখে রাশিয়া। একই দিন যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত লরি বেরিস্টোকে তলব করে তার হাতে প্রতিবাদলিপিও ধরিয়ে দেয়া হয়। রাশিয়া বলছে, যুক্তরাজ্যের ‘উসকানিমূলক পদক্ষেপ’ অন্য দেশের সরকারগুলোকে কূটনীতিক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করেছে। বেরিস্টোকে যুক্তরাজ্য দূতাবাস থেকে কর্মী সংখ্যা কমাতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ পক্ষত্যাগী গুপ্তচর হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মস্কোর ওপর অযাচিত চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি রুশ নাগরিক ইউলিয়াকে কনসুলার সুবিধা দিতে রাশিয়ার আহ্বানে সাড়া দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। স্ক্রিপাল ও তার মেয়েকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার ‘সত্যতা তুলে ধরতে’ রাসায়নিক অস্ত্রনিরোধ সংস্থা ওপিসিডব্লিউর সঙ্গে বৈঠকেরও প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। এ দুইজনের ওপর যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ যুক্তরাজ্যের, তা পরীক্ষা করে দেখতে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে ওপিসিডব্লিউ।