ইউনাইটেডের কাছে হেরে অপেক্ষা বাড়ল সিটির
জিতলেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হাতে রেখে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ঘরে তোলার রেকর্ড গড়তো ম্যানচেস্টার সিটি। নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধে দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে সে সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল পেপ গুয়ার্দিওলার দল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে পগবার জোড়া গোলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড রোমাঞ্চকর এক জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
শনিবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ৩-২ গোলে হারিয়েছে জোসে মরিনিয়োর দল।
চলতি মৌসুমে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া সিটির পয়েন্ট ৩২ ম্যাচে ৮৪। ১৩ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
কদিন পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকায় কেভিন ডি ব্রুইনে ও গাব্রিয়েল জেসুসসহ সাম্প্রতিক সময়ের নিয়মিত একাদশের চার জনকে বেঞ্চে রেখে দল সাজান গুয়ার্দিওলা। কদিন আগে চোট কাটিয়ে ফেরা সের্হিও আগুয়েরোকেও একাদশের বাইরে রাখেন কোচ।
গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা না থাকলেও প্রথমার্ধে তাদের শূন্যতা একেবারেই বুঝতে দেননি রাহিম স্টার্লিং-লেরয় সানেরা।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে বাঁ-দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা দাভিদ সিলভার বাড়ানো বল ছয় গজ বক্সে পিছলে পড়ে যাওয়া অ্যাশলে ইয়ংয়ের হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে সিটি। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। ২২তম মিনিটে পর্তুগিজ মিডফিল্ডার বের্নার্দো সিলভার শট রুখে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক।
কিছক্ষণ পর ছয় মিনিটের ব্যবধানে দুবার বল জালে পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে খেলতে থাকা সিটি।
২৫তম মিনিটে লেরয় সানের কর্নারে জোরালো হেডে দলকে এগিয়ে দেন বেলজিয়ামের ডিফেল্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানি। আর ৩১তম মিনিটে রাহিম স্টার্লিংয়ের পাস ডি-বক্সে পেয়ে শরীরটাকে ঘুরিয়ে দারুণ কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন জার্মান মিডফিল্ডার ইলকাই গিনদোয়ান।
দুই গোল খেয়ে খেই হারিয়ে ফেলে অতিথিরা। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। স্টার্লিং ও সিলভা সহজ দুটি সুযোগ নষ্ট না করলে বিরতির আগেই সব অনিশ্চয়তা শেষ হয়ে যেতে পারত।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে গিনদোয়ানের আরেকটি প্রচেষ্টা পোস্টে বাধা পেলে বেঁচে যায় ইউনাইটেড। এর খানিক পরেই খেলার ধারার বিপরীতে দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে ঘুরে দাঁড়ায় তারা।
৫৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে আলেক্সিস সানচেসের বাড়ানো বল ডি-বক্সে বুক দিয়ে সামনে বাড়ান আন্দের এররেরা। আর ডান পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন পগবা।
৫৫তম মিনিটে সানচেসের উঁচু করে বাড়ানো বল ছয়গজী বক্সের বাইরে থেকে হেডে সমতা ফেরান ফরাসি এই মিডফিল্ডার।
আর ৬৯তম মিনিটে চিলির ফরোয়ার্ড সানচেসের পাস ডি-বক্সে পেয়ে জয়সূচক গোলটি করেন ক্রিস স্মলিং।
ফলে ইংলিশ ফুটবলের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতায় ৪৯০ দিন পর ঘরের মাঠে হারের স্বাদ পায় সিটি। এর আগে সবশেষ তারা এখানে হেরেছিল ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর; চেলসির কাছে ৩-১ গোলে।
চলতি মৌসুমে এই প্রথম টানা দুই ম্যাচ হারল ম্যানচেস্টার সিটি। গত বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে লিভারপুলের মাঠে ৩-০ গোলে হেরেছিল গুয়ার্দিওলার শিষ্যরা।
আগামী মঙ্গলবার শেষ আটের ফিরতি পর্বে নিজেদের মাঠে খেলবে সিটি।
দিনের প্রথম ম্যাচে এভারটনের মাঠে গোলশূন্য ড্র করা লিভারপুল ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে।
আরেক ম্যাচে স্টোক সিটিকে ২-১ গোলে হারিয়ে পয়েন্টের হিসেবে অল রেডদের ধরে ফেলেছে টটেনহ্যাম হটস্পার। তবে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল।