থাকছেন না যাচ্ছেন! সমর্থকদের নয়নের মণির ভবিষ্যৎ কী ইস্টবেঙ্গলে
সুপার কাপে চারটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। আর এই চারটি ম্যাচেই তিনি সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে গিয়েছেন। লাল-হলুদে আউচো আসার পর থেকেই ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে শক্তপোক্ত দেখিয়েছে।
তিনি যেন এলেন, দেখলেন এবং জয় করে নিলেন। বহু ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে হয়ে যাওয়া শব্দবন্ধনীটি উগান্ডার জাতীয় দলের ফুটবলার খালিদ আউচোর ক্ষেত্রে বেশ খেটে যায়।
সুপার কাপে চারটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। আর এই চারটি ম্যাচেই তিনি সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে গিয়েছেন। লাল-হলুদে আউচো আসার পর থেকেই ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে শক্তপোক্ত দেখিয়েছে। আগের থেকে অনেক বেশি ঝলমলে লেগেছে খালিদ জামিল-সুভাষ ভোমিকের দলকে। রক্ষণের ফাঁকফোকড় বন্ধ করে দেন উগান্ডার জাতীয় দলের হয়ে খেলা ফুটবলারটি। অল্প দিনের উপস্থিতিতেই সবার মন কেড়ে নেওয়া খালিদ আউচো এখনও জানেন না ইস্টবেঙ্গলে তাঁর ভবিষ্যৎ। কলকাতায় তাঁর ভবিষ্যৎ এখনও ধোঁয়াশায় ঢাকা। পেশাদার ফুটবলারদের জীবনই যে এরকম। কখনও এই দেশ তো কখনও অন্য দেশ। খালিদ তাই বলছেন, ‘‘ভাল প্রস্তাব পেলে থেকে যাব ইস্টবেঙ্গলে। না পেলে অন্য ক্লাব দেখতে হবে।’’
ভাল সার্ভিস দেওয়ার পরেও তাঁকে নিয়ে কেন উৎসাহ নেই ইস্টবেঙ্গল-কর্তাদের? খালিদকে দেখে পছন্দ করেছিলেন স্বয়ং মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। জহুরির চোখ জহর চিনে নিতে ভুল করেনি। খালিদও নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন মাঠে। তিনি ছিলেন বলেই প্রতিপক্ষের আক্রমণের সুনামি সরাসরি আছড়ে পড়েনি এডু-গুরবিন্দরের উপরে। খালিদ সামাল দিয়েছেন প্রারম্ভিক ঝড়ঝাপটা। আবার খেলা তৈরির কাজটাও শুরু হয়েছে তাঁর পা থেকেই। এহেন খালিদ কি পরের মরশুমে ইস্টবেঙ্গলে থেকে যাবেন? প্রশ্নটা সমর্থকদেরও?
ইতিমধ্যেই নিজের দেওয়াললিখন পড়ে ফেলেছেন ডুডু ওমাগবেমি। ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডার এডুয়ার্ডোও হয়তো থাকবেন না নতুন মরশুমে। খালিদ প্রসঙ্গে ডুডু বলে ওঠেন, ‘‘খুব ভাল ফুটবলার খালিদ।’’ ডুডু বুঝছেন খালিদ ভাল। কর্তারা কি বুঝছেন? খালিদকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল উৎসাহ না দেখানোয় রীতিমতো বিরক্ত ডুডু বলছেন, ‘‘ভাল প্লেয়ারকে এই ক্লাবে বেশিদিন থাকতে দেওয়া হবে না। আমরা সবাই দেখব পরের বছর ইস্টবেঙ্গল কী করে!’’ খালিদের দেশের ফরাসি কোচ সেবাস্তিয়ান ডিস্যাব্রেও দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে রেখেছেন ইস্টবেঙ্গলের পাঁচ নম্বর জার্সিধারীকে। তিনি ভালই জানেন খালিদের দক্ষতা। অথচ বিদেশ বিভুঁইয়ে (পড়ুন কলকাতা) খালিদ সম্পর্কে কেউ কেউ নাকি অন্য ধুঁয়ো তুলেছেন। খালিদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। এমনটাও শোনা যাচ্ছে ময়দানে কান পাতলেই।
দেশের প্রাক্তন ফুটবলার কৃষ্ণেন্দু রায় এই সমালোচনা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলেন, ‘‘এখন কেন খালিদ আউচোকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে? ওকে তাহলে নেওয়া হল কেন? আর ইস্টবেঙ্গলে দল তৈরি করেন কারা? এই সব প্রশ্ন শুনে আমার তো দেশের ক্রিকেট দলের হেডকোচ রবি শাস্ত্রীর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। একবার শাস্ত্রী তো বলেই দিয়েছিলেন, কলকাতায় রসগোল্লা ছাড়া আর কী আছে? সে তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান তো রসগোল্লা নিয়েই ফিরছে।’’ দুই প্রধানকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন দেশের ডাকসাইটে রাইট ব্যাক। খালিদের দেশের ডিফেন্ডার স্যাভিও কাবুগো আবার বলছেন, ‘‘খালিদ আউচো আমাদের দেশের সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ওর বেশ ভাল গতি।’’ এই স্যাভিও কাবুগো ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া ডিফেন্ডার ইভান বুকেনিয়ার তুতো ভাই।
সবাই খালিদ সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত। ব্যতিক্রম শুধু ইস্টবেঙ্গল।