জয়ের নায়ককে প্রশংসায় ভাসালেন শাহরুখ

জয়ের নায়ককে প্রশংসায় ভাসালেন শাহরুখ
ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারের পাশাপাশি মালিক কিং খানের প্রশংসা কুড়লেন নারিন
আইপিএলের একাদশ আসরে নাইটদের স্বপ্নের শুরুর পিছনে বড় অবদান ক্যারিবিয়ান স্পিনারের। বল হাতে কামাল দেখাতে না পারলেও ইডেনে জ্বলে উঠল সুনীল নারিনের ব্যাট। ১৭ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে কেকেআরের বিরাট জয়ে বড় ভূমিকা নেন নাইটদের ‘মিস্ট্রি স্পিনার’! ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারের পাশাপাশি মালিক কিং খানের প্রশংসা কুড়লেন নারিন।

আইপিএলের একাদশ সংস্করণে নাইট যোদ্ধাদের লড়াই দেখতে রোববার সন্ধ্যায় ক্রিকেটের নন্দনকাননে উপস্থিত ছিলেন শাহরুখ খান। নাইটদের জয়ের পর মাঠে নেমে সমর্থকদের অভিবাদন জানানোর পাশাপাশি নিজের দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা শোনা গেল তার মুখে।

নারিন প্রসঙ্গে শাহরুখ বলেন, ‘ও আমার দলের ম্যাসকট। যখন যেভাবে প্রয়োজন হয়, সেভাবে আবির্ভাব হয়। ওর হেয়ারস্টাইল আমার পছন্দের।’ তার অন্যতম প্রিয় ছবি ‘দিল সে’-র গানের লাইন তুলে নারিনের উদেশ্যে শাহরুখ বলেন, ‘তু হি তু সতরঙ্গি রে..তু হি তু মনরঙ্গি রে..।’

ইডেনের বাইশ গজে কাল প্রথম ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান তোলে বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। নাইটদের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন নারিন ও লিন। অসি অল-রাউন্ডার সফল না হলেও ১৭ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে নাইটদের জয়ের ভিত গড়ে দেন করে নারিন। ১৯ বলে পাঁচটি ছক্কা ও চারটি বাউন্ডারি মেরে ৫০ রান করে ডাগ-আউটে ফেরেন তিনি। আর বল হাতে চার ওভারে ৩১ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন।

গত বছর বেশ কয়েকটি ম্যাচে ব্যাট হাতে নাইটদের পরিত্রাতা হয়ে উঠেছিলেন ক্যারিবিয় এই অফ-স্পিনার। এবার প্রথম ম্যাচেই নাইটদের জয়ে বড় ভূমিকা নিলেন। পরের ম্যাচ খেলতে সোমবারই শহর ছাড়ছে কেকেআর। মঙ্গলবার চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে নামবে কার্তিক অ্যান্ড কোং।



বিরাটদের হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু কেকেআরের

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ তথা আইপিএলে গত পাঁচটা মরশুমে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে জয় দিয়েই শুরু করেছিল গৌতম গম্ভীরের কেকেআর। কিন্তু এবার নাইট দলের ফ্রেমে নেই দীর্ঘ সাত মরশুমের নেতা। তবে তিনি না থাকলেও কেকেআর আছে কেকেআরেরই। একাদশ মরশুমের উদ্বোধনী ম্যাচ জিতে গম্ভীরের সেই ট্র্যাডিশনকেই যেন এগিয়ে নিয়ে গেলেন দীনেশ কার্তিক। গ্যালারিতে তখন উচ্ছ্বসিত কিং খান।

গম্ভীরের জুতায় পা গলিয়ে শুরুতেই বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে কার্তিককে। প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ বিরাট-এবি সম্বৃদ্ধ শক্তিশালী আরসিবি। কিন্তু অধিনায়োকচিত পারফরম্যান্স দিয়েই প্রথম ম্যাচে কেকেআর ভক্তদের মন জয় করে নিলেন কার্তিক। গম্ভীরের পথে হেঁটেই তার অভাব পূরণ করে দিলেন নাইট শিবিরের নয়া নেতা। সেই নারিনকে ওপেন করতে পাঠানো, সেই ঠান্ডা মাথায় একটা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। প্রাক্তনের দেখানো পথে এগিয়েই সফল বর্তমান।

গতবার গম্ভীরের নাইটের কাছে লজ্জার হার হেরে শহর ছেড়েছিলেন কোহলি। সে স্মৃতি যেন আরসিবি-কে এখনো তাড়া করে বেড়ায়। রোববার সেই হারের বদলা নেয়ার সুযোগ এসেছিল। শুরুটাও সেভাবেই করেছিল ব্যাঙ্গালোর। আরসিবি-র ম্যাচে এবার আর ক্রিস গেইল ঝড় দেখার সুযোগ ছিল না। কারণ এ মরশুমে তিনি পাঞ্জাবে। তবে ক্রিকেটের নন্দনকানে ঝড় উঠল। তাও আবার এক প্রাক্তন কেকেআর ব্যাটসম্যানেরই। ওপেন করতে নেমেই বাউন্ডারি আর ওভার বাউন্ডারির ঝড় তুলে খেলা জমিয়ে দিলেন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। তিনি ফিরে গেলেও কোহলি (৩১) ও এবি ডেভিলিয়ার্স জুটি রান রেটে প্রভাব পড়তে দেয়নি।

কিন্তু সে সময় ঘটল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। কেকেআরের জার্সিতে অভিষেক ঘটা নীতিশ রানা হয়তো রোববার রাতে উত্তেজনায় ঘুমাতে পারবেন না। কোনো দলের হয়ে অভিষেক ম্যাচে এমন মধুর স্মৃতির মালিক যে সকলে হতে পারেন না। পরপর দু’বলে বিশ্বের দুই সেরা ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে ম্যাচের মোড়ই ঘুরিয়ে দিলেন রানা। বাকি কাজটা সারলেন বিনয় কুমার, জনসনরা।

কেকেআরের এদিনের জয় নিঃসন্দেহে দলগত সাফল্য। বোলিংয়ের মতো ব্যাটিং বিভাগও নজর কাড়ল। নারিনের অর্ধ-শতরান তো বটেই, শেষ মুহূর্তে যেভাবে কার্তিকের ব্যাট জ্বলে উঠল, তাতেই নিশ্চিত হয় প্রথম জয়। আর সেই সঙ্গে আরো একবার হতাশায় ডুবলেন বিরাট। তবে তিনি কেন উমেশ যাদবকে এত পরে বল করতে পাঠালেন, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ ম্যাচের পর আইপিএলের নেতা হিসেবে মস্তিষ্কে আরো একটু শান দিতেই হবে বিরাটকে।

আরসিবি : ১৭৬/৭ (ম্যাকালাম-৪৩, ডেভিলিয়ার্স-৪৪, মনদীপ-৩৭)

কেকেআর : ১৭৭/৬ (নারিন-৫০, কার্তিক-৩৫*)

৪ উইকেটে জয়ী কেকেআর।