বিনা পারিশ্রমিকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন ক্লার্ক

বিনা পারিশ্রমিকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন ক্লার্ক
অবসর ভেঙ্গে পুনরায় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে তৎকালীন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ নিষিদ্ধ হওয়ার পর ভেঙ্গে পড়া দলকে টেনে তুলতে সাহায্য করার লক্ষ্য নিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার প্রস্তাব দিয়েছেন ক্লার্ক।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তৃতীয় টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের দায় স্বীকার করার পর স্মিথ এবং সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের নেতৃত্ব কেড়ে নেয়া হয় এবং ক্রিকেটে এক বছর নিষিদ্ধ করা হয়।
সিডনির সানডে টেলিগ্রাফ পত্রিকাকে ৩৭ বছর বয়সী ক্লার্ক বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সাহায্যার্থে আমি সব কিছুই করব।’

তিনি বলেন, ‘বয়স বয়সই। ১৭ বছর কি খুব তরুণ? বয়সকে আমি কখনোই পাত্তা দেইনি। ব্র্যাড হগ ৪৫ বছর বয়সে খেলেছেন বয়স কত তা নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমি মনে করি এটা প্রতিশ্রুতি ও উৎসর্গের বিষয়।

‘বিষয়টা পুনরায় মোটরসাইকেলে চড়ার মতো। আমি সব সময়ের মতোই ফিট ও সুস্থ।’
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) অস্ট্রেলিয়ার নাইন নেটওয়ার্ক-এর ধারভাষ্যকার হিসেবে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করা সাবেক এ ব্যাটসম্যান বলেন, তিনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রদান নির্বাহী জেসম সাদারল্যান্ডের কাছে বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তবে কোনো জবাব পাননি।
১১৬ টেস্ট খেলে ২০১৫ সালে অবসর নেয়া সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, তার অভিজ্ঞতা ধুকতে থাকা দলটির জন্য মাঠের ভিতরে-বাইরে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

পত্রিকাটিকে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে ভাল-খারাপ সব কিছু অভিজ্ঞতাই আমার আছে। এই তরুণ খেলোয়াড়দের সাহায্য করার অভিজ্ঞতা আমার আছে এবং আমাদের সঠিক ফোকাস হওয়া উচিত অন্য খেলোয়াড়রা প্রস্তুত হয়ে উঠে না আসা পর্যন্ত তাদেরকে দেখভাল করা।’
সিএ’র দেয়া শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করবেন না বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছেন স্মিথ, ওয়ার্নার ও নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বোলার ক্যামেরুন ব্যানক্রফট।

অর্থাৎ আাগমী মার্চের আগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাঠে নামতে পারছেন না স্মিথ ও ওয়ার্নার। উইকেটরক্ষক টিম পাইনকে অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়েছে।

ক্লার্ক বলেন, বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারি অসি দলকে কয়েক বছর পিছিয়ে দিতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ হেরে অস্ট্রেলিযা দল বর্তমানে টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘এ নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমি চাইনা আমাদের অবস্থা ওয়েস্ট ইন্ডি দলের মত হোক।’
‘আমরা পরবর্তী পাঁচ বছরের কথা বলছি না। পরবর্তী ছয় মাসের কথা বলছি এবং এখনই এ সমস্যার সমাধান করা দরকার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া আমাকে বললে, সাহায্যার্থে আমি সব কিছু করব।’

গিবসনের লক্ষ্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে শীর্ষে তোলা

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের কোচ ওটিস গিবসন বলেছেন, তার লক্ষ্য দলকে টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে তোলা।

ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গিবসন বলেন, ‘খেলোয়াড়রা যেভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করে কোচরাও একইভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করে থাকে।’
এক সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড দলের কোচের দায়িত্ব পালন করা সাবেক ক্যারিবীয় এ খেলোয়াড় বলেন, ‘ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয় ছিলো আনন্দদায়ক। তবে এটা ছিলো তার সার্বিক লক্ষ্যের একটা অংশ।’

গতবছর ইংল্যান্ড দলের বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজ মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন গিবসন।

নিজ মাঠে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় দিয়ে আইসিসি র‌্যাংকিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা কোচের দায়িত্ব শুরু করেন তিনি। এরপর নিজ মাঠে শীর্ষে থাকা ভারত ও তৃতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিযার বিপক্ষে সম্প্রতি সিরিজ জয় করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বিতর্ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দুই সিরিজ জয় বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয়ে অনেকে আলোচনা সমালোচনা হলেও বিশেষ কিছু।’
অস্ট্রেলিয়া সিরিজের তৃতীয় টেস্টে বল টেম্পারিং করায় অসি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ, সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার এবং ওপেনিং ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
গিবসন বলেন, ‘কোচ হিসেবে প্রথম ছয় মাস আমি বেশ উপভোগ করেছি। একটা ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে, দশটির মধ্যে আমরা আট টেস্টে জয়ী হয়েছি এবং দুটি বড় সিরিজ জিতেছি।’
ভারতকে ২-১ এবং অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়ে র‌্যাকিংয়ের শীর্ষে থাকা টিম ইন্ডিয়ার চেয়ে মাত্র চার পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে মৌসুম শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

দুই দলের বিপক্ষে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে উল্লেখ করে গিবসন বলেন, ‘সবচেয়ে কঠিন দ’ুটি দলের বিপক্ষে আমরা খেলেছি। ব্যাটিং সহায়ক পিচে ভারতের বিপক্ষে আমরা চার পেসার নিয়ে খেলেছি। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে আমাদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে মাঠে নেমেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিলো পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর নিজ মাটিতে অস্ট্রেরিয়ার বিপক্ষে একটি সিরিজ জয় করা প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা দল হওয়া।

‘প্রত্যেক ম্যাচে এটা ছিলো আমাদের ফোকাস। নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে না পারায় আমরা ডারবান টেস্ট হেরেছি। তবে আমরা জানতাম আরো তিন ম্যাচ বাকি আছে।’
‘প্রত্যেক ম্যাচেই আমরা আগের টেস্ট থেকে ভাল করেছি এবং ব্যাট হাতে আইডেন মার্করাম ও বল হাতে কাগিসো রাবাদার মতো কিছু তরুণ খেলোয়াড়দের কাছ থেকে খুব ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি।’
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের বড় আশা নিয়ে গিবসনকে নিয়োগ দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ।

টেস্ট মৌসুমে সফল হলেও ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ৫-১ ব্যবধানে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে দলে বেশকিছু ইনজুরি থাকায় এ পরাজয় নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন গিবসন।
তিনি বলেন, ‘ওয়ানডে সিরিজের ফল খুব ভালো হয়নি। তবে এতে আমি কিছু মনে করিনি। আমি জানি, দর্শকরা দলের জয় দেখতে চায়। তবে আমার দৃষ্টিতে ইনজুরির কারণে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে আমি মাঠে পাইনি।’