উপমহাদেশ
পাকিস্তান-রাশিয়া কৌশলগত অংশীদারিত্ব!
রাশিয়াকে প্রথমবারের মতো বহুমাত্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে। স্নায়ুযুদ্ধকালীন পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী এই দেশ দু’টি যৌথভাবে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করছে।
মঙ্গলবার দেয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বহুমাত্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উভয় দেশের মানুষ লাভবান হবে এবং এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি’।
সাম্প্রতিক নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী উভয় দেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে উদযাপন করা হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্কে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উভয় দেশকে একে অপরের পাশে থাকতে দেখা গেছে; কিন্তু এবারই প্রথম পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে উদ্যোগী হতে দেখা গেল। দেশটির এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ এবং এতে স্পষ্ট যে, পাকিস্তান পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে রাশিয়ার আরো নিকটবর্তী হতে চাইছে। এখানে উল্লেখ্য, পাকিস্তানের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরূপ মনোভাবই দেশটির এই উদ্যোগে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
রাশিয়ার দীর্ঘ দিনের মিত্র ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করায় দেশটিও পাকিস্তানকে তাদের বন্ধু হিসেবে সাগ্রহে টেনে নিয়েছে। পাকিস্তান-রাশিয়ার মিত্রতা দ্রুত পরিপক্ব অংশীদারিত্বে বিকশিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র ড. মুহাম্মদ ফয়সাল।
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাস, অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ও গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে মতৈক্যের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে’।
ড. মুহাম্মদ ফয়সাল আরো বলেন, পাকিস্তান রাশিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক পরাশক্তি, তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় অন্যতম শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানসহ কিছু আঞ্চলিক বিষয়ে পাকিস্তান, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে মতৈক্য রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বাইরে এই তিনটি দেশই আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী আফগান সমস্যার সমাধান চায়।
নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিরক্ষা ব্যয় হ্রাসে বাধ্য হলো রাশিয়া : জরিপ
রাশিয়ার সামরিক ব্যয় ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ২০১৭ সালে অনেক হ্রাস পেয়েছে। মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে সরকারি কোষাগারে ঘাটতি দেখা দেয়ায় এ ব্যয় হ্রাস করা হয়। এক জরিপ থেকে বুধবার এ তথ্য জানা গেছে। খবর এএফপি’র।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) জানায়, মস্কো ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত বছর রাশিয়ার সামরিক ব্যয় ছিল ৬৬.৩ বিলিয়ন ডলার। পূর্ববর্তী ২০১৬ সালের তুলনায় এ ব্যয় ২০ শতাংশ কম।
খবরে বলা হয়, ব্যাপক আর্থিক সংকটের মুখে মস্কো এর আগে ১৯৯৮ সালে তাদের দেশের সামরিক ব্যয় হ্রাস করে।
ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপের অন্তর্ভূক্তি প্রশ্নে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধ আরোপের কথা উল্লেখ করে এসআইপিআরআই’র সিনিয়র গবেষক সিমন ওয়েজমান বলেন, ‘রাশিয়া সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া বজায় রাখলেও আর্থিক সমস্যার কারণে সামরিক বাজেট কাটছাট করছে। ২০১৪ সাল থেকে দেশটি এই সংকট মোকাবেলা করছে।