ফুটবল
বিশ্বকাপের সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে যা করবেন
জার্মানির কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর গ্যালারিতে এমন অনেক ব্রাজিল ভক্তকেই হাইমাউ করে কাঁদতে দেখা যায়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, কিছু কিছু ম্যাচ আক্ষরিক অর্থেই হৃদপিণ্ড ব্যথা করে দিতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে দর্শকবহুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতাটির সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া, মদ্যপ অবস্থায় ড্রাইভিং, ফ্যানদের সহিংসতা, স্ত্রী পেটানো, মাতলামি সবকিছুই ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের (বিএমজে) এক জরিপে দেখা যায়, ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড পেনাল্টি শট আউটে আর্জেন্টিনার কাছে পরাজিত হওয়ার পর ব্রিটেনে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। পূর্ববর্তী বছরের একই দিনের চেয়ে তখন ৫৫ শতাংশ বেশি লোকের হৃদক্রিয়ার সমস্যার চিকিৎসা নেয়।
নেদারল্যান্ডে পরিচালিত অপর এক জরিপে দেখা যায়, ১৯৯৬ সালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে ডাচ দল যখন ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নেয়, সেদিন অতিরিক্ত ১৪ জন পুরুষ, ৫০ শতাংশ বৃদ্ধ মারা যান।
ফুটবল ম্যাচের সময় হতাশা, সহিংসতা বহুল পরিচিত ব্যাপার এবং বিশ্বকাপের সময় তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। আর প্রতিযোগিতাটি যতোই এগিয়ে যেতে থাকে, এসব মাত্রা ততই বাড়তে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর প্রথম বিশ্বকাপের ১৯৫০ সালে অনুষ্ঠিত, সেবার উরুগুয়ের কাছে স্বাগতিক দল পরাজিত হওয়ার পর বেশ কয়েকজন ব্রাজিলীয় আত্মহত্যা করেছিল। এরপর থেকে আবেগপ্রবণ ফ্যানদের মধ্যে এই দুঃখজনক ঘটনাটি বৃদ্ধিই পাচ্ছে।
তবে মজার ব্যাপার হলো, কোন দল যদি জয়ী না হয়ে হেরে যায় তবে সহিংসতার ঝুঁকি এক-চতুর্থাংশ কমে যায়। ওয়েলসে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সহিংসতার গবেষক ডাস সিবারজাসিঙ্গম দেখতে পেয়েছেন, জাতীয় রাগবি ও ফুটবল ম্যাচের সময় নগরীতে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
ওয়েলস যখন ম্যাচে জয়ী হয় তখন সহিংস ঘটনায় গড়ে আহতের সংখ্যা হয় ৩৩, কিন্তু হারলে তা হ্রাস পেয়ে হয় ২৫। দলটি দেশে বা বিদেশে যেখানেই খেলুক না কেন তাতে তেমন হেরফের হয় না। গবেষকের মতে, বীরত্ব এবং দেশপ্রেমের ভ্রান্ত অনুভূতিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে মদ্যপ অবস্থা।
তিনি বলেন, জয়কে সাধারণভাবে উদযাপন করা হয় অ্যালকোহলের সাথে; আর সেক্ষেত্রে সহিংসতার মাত্রা বাড়তেই থাকবে।
এমনকি যাদের হৃদপিন্ড ভালো আছে এবং বাড়িতে বসেই ম্যাচটি উপভোগ করে, তারাও দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তবে বিশ্বকাপের সময়ে সুস্থ থাকার উপায় হলো নিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণ এবং ব্যায়াম করা।
গত বিশ্বকাপের সময়ে থাইল্যান্ডের ডেপুটি পাবলিক হেল্থ মিনিস্টার সুগাপং সুয়েল ওয়াংলি বিশুদ্ধ পানি, হারবাল চা পান করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বিয়ার, ক্রিপস বর্জনের উপদেশ দেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, যারা মদ, বিয়ার পান করে তারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগে এবং ভবিষ্যতে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। (ইন্টারনেট)