রাশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় উঠল উরুগুয়ে

রাশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় উঠল উরুগুয়ে। ‘জি’ গ্রুপের রানার্সআপ দল হিসেবে রাশিয়াও উঠেছে শেষ ষোলোয়
শেষ ষোলো নিশ্চিত হয়েছে আগেই। ম্যাচটা তাই ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার লড়াই? পুরোপুরি তা নয়। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমীকরণ মেলানো বাকি ছিল। এই বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের উড়ন্ত শুরু সেই পথে কিছুটা এগিয়ে রেখেছিল রাশিয়াকে। কিন্তু স্বাগতিকদের সেই ছন্দে লাগাম টেনে ৩-০ গোলের জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় উঠল উরুগুয়ে।

Pran upসৌদি আরব ও মিসরের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে ৮ গোল করেছিল রাশিয়া। সামারায় আজ সেই রাশিয়াই গোলের দেখা পায়নি! এমন নয় যে ডিয়েগো গোডিনের নেতৃত্বে উরুগুয়ের রক্ষণভাগ দুর্ভেদ্য দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গাজিনিস্কি-সামেদোভরা সেভাবে দাঁত বসাতে পারেননি। আর উরুগুয়ে প্রথমার্ধেই এগিয়ে গিয়েছে দারুণ দুটি সুযোগের সদ্ব্যবহার করে।

ম্যাচের ৯ মিনিটে উরুগুয়ে মিডফিল্ডার রদ্রিগো বেন্তানকুরকে বক্সের মাথায় ‘ডি’র মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন রাশিয়ার ইউরি গাজিনিস্কি। ফ্রি–কিক পায় উরুগুয়ে। ২০ গজ দূর থেকে বেশ চালাকি করে শট নিয়েছিলেন সুয়ারেজ। রাশিয়ান ‘মানবদেয়াল’-এর ডান পাশ দিয়ে দূরের পোস্টটা দেখা যাচ্ছিল। শট নেওয়ার আগেই এডিনসন কাভানি ‘মানবদেয়াল’-এর পাশ থেকে সরে যাওয়ায় সরু কিন্তু ফাঁকা পথটুকু দিয়ে বল জালে পাঠাতে কোনো সমস্যা হয়নি সুয়ারেজের। বিশ্বকাপে এটা তাঁর সপ্তম গোল। আর এক গোল করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন উরুগুয়ের হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা অস্কার মিগুয়েজকে।

১০ মিনিটে উরুগুয়ে এগিয়ে গেলেও রাশিয়ার আক্রমণের ধার কমেনি। প্রথমার্ধের শুরু থেকেই তারা আক্রমণাত্মক খেলেছে। এতে কিছুটা অগোছালো হয়ে পড়েছিল তাদের মাঝমাঠ। ডিয়েগো লাক্সাল্ট-তোরেইরাদের নিয়ে গড়া উরুগুয়ে মিডফিল্ড এই সুযোগটাই নিয়েছে। মাঝমাঠ থেকে খেলাটা গুছিয়ে তারা বেশ কয়েকবার হানা দিয়েছে রাশিয়ার রক্ষণভাগে। এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে দ্বিতীয় গোল। ২৩ মিনিটে কর্নার থেকে বল ‘ক্লিয়ার’ করতে পারেনি রাশিয়ান রক্ষণ। সেই সুযোগে বক্সের বাইরে থেকে উরুগুয়ে মিডফিল্ডার লাক্সাল্টের শট রাশিয়ার ফরোয়ার্ড ডেনিস চেরিশভের পায়ে লেগে জালে জড়ায়।

চেরিশভের এই ভুলটুকু রাশিয়ার কোচ স্তানিস্লাভ চেরচেশভ হয়তো ক্ষমা করতে পারেননি। রাশিয়ার হয়ে ২ ম্যাচে ৩ গোল করা এই ফরোয়ার্ডকে তিনি ৩৮ মিনিটেই তুলে নেন! এতে রাশিয়ার আক্রমণের ধার দ্বিতীয়ার্ধেও কমেছে। বরং দ্বিতীয়ার্ধে কাভানি-সুয়ারেজরা বেশ কিছু গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন। তবে ৯০ মিনিটে রাশিয়ার বক্সে জটলার মধ্যে থেকে ঠিকই গোল আদায় করে নেন কাভানি।

গ্রুপপর্বে নিজেদের সব ম্যাচ (৩) জিতে মোট ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় উঠল উরুগুয়ে। এই ম্যাচটা হারায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ রাশিয়া। গ্রুপের বাকি দুই দল মিসর ও সৌদি আরবের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে আগেই।