করোনাভাইরাস: শপিং মল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত 'ঝুঁকিপূর্ণ' মনে করছেন শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই রোববার থেকে বাংলাদেশের বিপনি বিতানগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' মনে করছেন বাংলাদেশের শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

দেশটিতে এমন দিনে এই লকডাউন শিথিল করা শুরু হয়েছে যেদিন বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮৭ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। একদিনে রোগী শনাক্তের হিসাবে এটাই সর্বোচ্চ।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ব্যবসায়ীরা চাইলে মার্কেট খোলা রাখতে পারবে, তবে তাদের একটাই শর্ত দেয়া হয়েছে সেটা হল যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।

কিন্তু অধ্যাপক ইসলাম বলছেন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন ঢাকায় রোববার থেকে অনেক দোকান খুলে দেয়ার ব্যাপারে তার "যথেষ্ট উদ্বেগ আছে"।

স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানা সম্ভব না বলে তিনি মনে করেন। "কারণ আমাদের দেশে মানুষের আচার ব্যবহার এমন যে তারা সবসময় এসব মেনে চলে না। বেশ কিছু মানুষ এসব অমান্য করে।"

"রোববার আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮৭ হয়েছে, এরপর তা যদি আরও বাড়তেই থাকে, তাহলে আমরা এই গ্রাফটাকে সম্পৃক্ত করতে পারব গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি খোলার সঙ্গে এবং আমাদের দোকানপাট খুলে দেয়ার সঙ্গে।

"সেজন্য আমরা মনে করছি এই সময়ে এই যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, সেই সিদ্ধান্তটা আমাদের দেশের জন্য একটা ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত।"

তিনি বলছেন গত ২৮শে এপ্রিল গার্মেন্টস কারখানাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে, যেখানে কর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।

"তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মেনেই খুলে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেখা গেছে তারা স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণভাবে মানতে পারে নাই।"

"একটা ধারণা ছিল যে খুলে দেবার ১৪ দিন পরে অর্থাৎ ১১/১২ই মে নাগাদ এর প্রভাব দেখা যাবে সার্ভেইলেন্স বা পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে," তিনি বলেন।

"আজ ৮৮৭জন পজিটিভ হয়েছে। এটা যদি আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি খোলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আমরা চিন্তা করি, আমরা করতেই পারি, তাহলে (সংখ্যাবৃদ্ধির) সম্ভাব্য কারণ সেটাই হবে।"

বাংলাদেশের অর্থনীতি করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্থবির হয়ে গেছে এবং সামনে ঈদ। সেই প্রেক্ষাপটে বহু মানুষের জীবনধারণের জন্য দোকানপাট খুলে দেয়া একটা বাস্তব পদক্ষেপ এবং প্রয়োজন, একথা স্বীকার করলেও অধ্যাপক ইসলাম বলছেন এই পদক্ষেপ কার্যকর করার সাথে সাথে যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেত, তাহলে উদ্বেগ হয়তো কমতো।

কিন্তু তিনি বলছেন বাংলাদেশের বাস্তবতায় মানুষের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাই "সবচেয়ে বড় অসুবিধা"।

"আমরা ইকোনমিক অসুবিধার বিষয়টা ভাল করে ফিল করি, সেটা স্বাভাবিক, কিন্তু তার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাও যে উচিত সেটা আমরা মানতে পারি না।"

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দোকানপাট খোলার শর্ত হিসাবে তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

Source:BBC News